Saturday 4 February 2017

কবি-স্বামি ও কবি-স্ত্রির সরলিকৃত জটিলতা

  
 Nasrin Siraj feeling মহিলা কবি
· 5 hrs ·
আনটাইটেলড
স্ত্রী অন্তঃসত্তা হলে কবি স্বামীর মন একই সাথে নিশ্চিন্ত ও উচাটন হয়
দূর দেশে উচাটনী কবিতা পড়ে পড়ে কবি স্বামীর প্রেমিকা নয় কিন্তু প্রিয় এবং গবেষক বান্ধবীর মন হয় উতসুক
আশেপাশের সব বিপ্লবী নারীবাদীদের সাথে কবির এহেন লাম্পট্য় মানসিকতা বিশ্লেষণ করে করে গবেষক বান্ধবী ভাবে
দেয় না কেন স্ত্রী-রা এইসব বিয়ে ভেঙ্গে স্বাধীনতা যত কবি সাহিত্য়িক স্বামীকে
তালাক না দিলো নাকের ওপর একটা ঘুষি মেরেও তো চুকিয়ে দিতে পারে এইসব দোদুল্য়মানতার বিলাসিতা
কবি স্ত্রী বলে আরে রাখো তোমার এসব লোক দেখানো বিপ্লব
বিপ্লবতো হতে হবে একদম গভীরে
কে নিয়েছে কবি স্বামীর সন্তান পেটে? পাগলের যত সুখ সব মনে মনে
আর জানোনা বুঝি করছে কার সাথে ফষ্টি নষ্টি কবি স্বামীটি?
আমারই বান্ধবী আরেক তার স্বামীর বিশ্বাসঘাতকতার শোধ নিচ্ছে তারিয়ে তারিয়ে
ধানমন্ডি পার্কের লেকে নৌকা প্য়াডেল করে আমরা আমাদের যত গোপন বিপ্লবের কথা শেয়ার করি হেসে হেসে




 আমার টেইক

ভাল ঘোল বানাতেও ভাল দুধ লাগে।

নাসরিন শিরাজের স্টেটাসে মজা পাইসি।'কবি স্বামির' জায়গাতে 'কবি স্ত্রি' হলে সামাজিক দ্বিচারিতাটা কিভাবে দেখা হবে?ছেলেদের একটা সুবিধা যে তাদের মাসিক হয় না এবং গর্ভধারন করে না।তার উপর বিবিধ ধর্মাচার ছেলেদের দৈহিক বহুগমনকে বুহুভাবে জায়েজ করেছে।কিন্তু মন বহুগামি করা কঠিন।ধর্মাচার অবস্য মনের ধার ধারে না।রোমান্টিকেরা বলে মনটাই সব, মনটাই চোখ, মনটাই দেহ!মোদ্দায় নারি, পুরুষের আয়ু বাড়ছে।তার ওপর অনেক বৈবাহিক সুসম্পর্কই পারস্পরিক বোঝাপড়ায়, পারস্পরিক স্পেসের তাগিদে বিবাহ বিচ্ছেদে গড়ায়, বন্ধুত্ব অটুট থাকে।বাজে বিয়ে, বাজে বিচ্ছেদগুলার কথা আনছি না।

বিশ্বাসঘাতকতা কি মনে ঘটে, না কি যৌন আচরনে ঘটে?গ্রিক আদি সাহিত্য বা ধর্মের যৌন অনুশাষনে যেসব ট্যাবু নিয়ে বিশাল কিচ্ছাকাহিনি রচিত হয়েছে, তা বলে দেয় নারি, পুরুষের সম্পর্কগুলো সামাজিক প্রয়োজনে বিবর্তিত, তাতে মনের বা ব্যাক্তির অভিব্যাক্তিকে খুব একটা কি একেবারেই পাত্তা দেয়া হয় নাই।প্রেমকেও ধরে নেয়া হয়েছে আনুগত্য প্রকাশের মাধ্যম হিশেবে।হেডনিজমকে শুধু ধর্মাচারে নয়, এমন কি ধর্মের অনুশাষনের বাইরে কমিউনিজমেও গ্রহন করা হয় নাই।যৌনমুক্তিকে আটকে দেয়া হয়েছে বা অবমুল্যায়ন করা হয়েছে পুরুষের একচেটিয়া সম্পদগত স্বার্থে।আবার নারিও চাপানো অনেক কিছু মেনে নিয়েছে সম্পদের পেষনে, প্রলোভনে।পুরুষের রাজত্বের শুরু সেখান থেকে যেখান থেকে নারি শিশুকে সামাজিক আচারের লুলাবাই শুনায়ে ঘুম পাড়ায়।

অনেক ভুগিযুগি বলা যায়।তবে প্রেমাস্পদকে না পাইলে মন খুব খারাপ হয়।বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ফাইনাল ইয়ারে আমার প্রথম বাংলাভাষি প্রেমাস্পদ ছুটে যায় আমার বাবার ঢাকাতে বাড়ি না থাকার কারনে, এইরকম আর কি।আর বাংলাদেশে প্রথম চাকুরিকালিন দ্বিতিয় প্রেমাস্পদ ছিল মহা ঘাড়তেড়া।সে ছিল বিবাহিত, স্বামিকে বিচ্ছেদে রেখে আমাকে মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং সুজোগ থাকাতে একবার আমার সাথে বিদেশেও চলে আসে।এই দ্বিতিয় প্রেমাস্পদের মা আমাকে একদিন জিজ্ঞেস করেন, 'তোমার আব্বা ঢাকাতে বাড়ি করসে?'আমরাতো হাসতে, হাসতে...গাজা মেশানো বিয়ারের ঢেকুর তোলা অট্টহাসি, তবে মন খারাপ হয়ে গেছিল।তবে দ্বিতিয় প্রেমাস্পদ এসবের তোয়াক্কা থোড়াই করতো, একেবারে পুর্নাংগ সাহসি মানুষ।আমার প্রথম প্রেমাস্পদ বাংলাদেশের বিশাল এঞ্জিওর বিশাল পরিচালক।দ্বিতিয় প্রেমাস্পদ প্রয়াত, তার মৃত্যতে মনে হচ্ছিলো, এখনো হয় যে দুনিয়ার ক্ষতি হলো।

স্বেতাঙ্গিনি সহবাসে এই 'বাবার বাড়ি আছে কি নাই' বিড়ম্বনায় পড়তে হয় নাই, ছেলে মেয়ের বাবা হওয়ার সুজোগ পাওয়া গেছে।মধুসুদনের মতো মন্দের ভাল এই ঘটেছে যে কি ছাতামাথা লিখি, তার হদিশ স্বেতাঙ্গিনি শজ্যাসঙ্গিনিগন করতে পারে নাই।তবে বাংলাদেশে এবং বাংগালি ডায়াস্পোরায় 'কবি স্বামির' এবং 'কবি স্ত্রির' অস্তিত্ব আছে।মিরপুর চিড়িয়াখানাতে তারা স্বমি ও স্ত্রিগুনে তুমুলভাবে দ্রষ্টব্য।নাসরিন শিরাজ সঙ্খেপে, কিন্তু নিপুনভাবে তাদের ওপর আলোকপাত করেছে।আর আমার প্রবনতা কি এই বাবদে, চোরের মন খিরাই ক্ষেতে?চুরিবিদ্যা মহাবিদ্যা, যদি না পড়ো ধরা।আবার প্রেমাস্পদকে পাইতে দুই চারটা কিল, ঘুষি প্রফেশনাল হ্যাজার্ড হিশাবে নেয়া যেতে পারে।কেন?

প্রেমাস্পদ জিনিসটা অমুল্য জিয়ন কাঠির মতোন।যৌন সমর্পনের সাথে এটা মিলে গেলে, বাবার বাড়ি থাকলেই কি না থাকলেই কি!ঐ হিশাবগুলা চলে আসলেই ভান, ভনিতাগুলা শুরু হয়, কেউ কেউ যাকে বলে বিশ্বাসঘাতকতা বা লাম্পট্য, কিন্তু আদতে সংসারেরই শর্ত এগুলো।প্রেমাস্পদ ব্যাপারটা খুব সুক্ষ আবার প্লেটনিক নয়, খুবই জৈবিক এবং দেহতাত্বিক।প্রেমাস্পদকে না পাওয়াতে দার্শনিকতা করে ফেল্লাম।কিন্তু ভাই, ভাল ঘোল বানাতেও ভাল দুধ লাগে!

চয়ন খায়রুল হাবিব
৪/০২/১৭
ব্রিটানি