ডোরার কান্না, ক্ষেপি সংস্কৃতি ও কিম্ভুত রিপ্রেসেন্টেশানবাজেরা |
বলতে চাচ্ছি যে প্রত্যেক ভিক্ষুকের একটি নাম আছে।পাগল বলি আর মানসিক প্রতিবন্ধি বলি, তাদের প্রত্যেকের একটি নাম আছে।ভিক্ষাবৃত্তি, পাগল হওয়াটা অপরাধ নয়।ধর্ষন একটা অপরাধ।
সাবিন রমনিদের অপহরন ও ধর্ষন Pietro da Cortona, 1627–29. |
ধর্ষনকারি
আরেকজনের মানষিক, দৈহিক অবস্থানের ওপর আগ্রাসন চালায়।বেশির ভাগ সময়
পরিকল্পনা করে ধর্ষনকারি/রা আগ্রাসন চালায়।আমরা মানে বাংলাভাষিরা এখনো
ধর্ষনকারি/দের কে, কি পেষায়, কতটুকু সম্পদ বা ক্ষ্মতার অধিকারি সে হিশাবে পার পেয়ে
যেতে দেই।বাংলাদেশের বাংগালিরা যাদের জাতিয় নেতা হিশেবে স্বিকৃতি দেয়,
তারা আমাদের পাকিস্তান নামের এমন একটি রাস্ট্রযন্ত্রের সাথে জুড়ে দিয়েছিল,
যে-রাস্ট্রযন্ত্রে ধর্ষনকারি/দের প্রাতিষ্ঠানিক বিবিধ খেতাবে ভুষিত করা
হয়েছে।
এমেরিকা, পশ্চিমকে এটাসেটা বলে, কুয়েত আগ্রাসনের সময় সাদ্দামের বাহিনি কুয়েতি মহিলাদের ওপর যে ধর্ষনযজ্ঞ চালায় তাকে আমরা গৌন করে ফেলি।আসাদের বাহিনি আর আইসিস মিলে সিরিয়ার মহিলাদের ওপর যে বর্বরতা চাপিয়ে দিয়েছে সেটাও আমরা এ তুলনায়, সে তুলনায় দেখেও না দেখার একটা ভান চালিয়ে যাই।আবার যে পশ্চিম মানবতা বিরোধি অপরাধের আন্তর্জাতিক বিচারালয় বানিয়েছে, তারা এখনো ভিয়েতনামে বর্বরতা চালাবার দায়ে মার্কিন বাহিনিকে বিচারের সম্মুখিন করে নাই।এটা অবস্য দ্রষ্টব্য যে বসনিয়াতে যে সার্বিও বাহিনি জেনোসাইড, ধর্ষনযজ্ঞ চালিয়েছিল তাদের হোতাদের আন্তর্জাতিক আদালতে দোষি সাব্যস্ত করে দন্ডবিধান করা হয়েছে।
আর্তনাদ, এডওয়ার্ড মাঞ্চ |
পাগল শব্দটা বাংলাতে গালাগাল, কখনো বা আদরনিয় আখ্যা হিশাবে ব্যাবহার হয়।ছড়াপাঠ পর্ব থেকে কবিতার উচ্চতরো শিল্পে উপনিত হতে না পারায় বাঙ্গালি অনেক সময় কবিকে পাগল বলে বসে এবং কবিতা লেখার জন্য যে ব্যাতিক্রমি মেধার দরকার, তা বুঝে না।ফলে 'পোয়েটিক লাইসেন্সের' মানেও ঠিকঠাক বুঝে না।আবার গড়পড়তা বা যা তা লোকজন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে সাহিত্যের শিক্ষক হয়ে যাওয়াতে, আর বইমেলাতে হাজারো গড়পড়তা, কাচা কবিতার বই প্রকাশনার ফলে, এই গড়পড়তাদের দংগলবাজি কবি ও পাগলের আদরনিয় সম্পর্কটাকে মলিন করে দিয়েছে।রবীন্দ্রনাথ নজরুলকে আদর করে পাগল আখ্যা দিয়েছিল।বিদ্যাসাগরও মাইকেলকে পাগল মনে করতেন!
মানষিক প্রতিবন্ধিদের প্রতি এখনো 'পাগল' শব্দটা ব্যাবহার করা হয়।যারা 'মানষিক প্রতিবন্ধি' বলে, তারাও এ-অবস্থার শিকারদের নাম নিতে চায় না।আত্মিয়, স্বজন, পরিচিতদের ভেতর যারা মানসিক রোগের শিকার, তাদের এক অর্থে আমরা নামহিন, গোত্রহিন করে ফেলি।এখানে বাতিকগ্রস্থ বা এক্সেন্ট্রিকদের কথা বলছি না।নোবেল পুরস্কার জয়ি অঙ্কবিদ প্রয়াত জন ন্যাশ স্কিতজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত হয়েছিল।সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ চিত্রকরদের একজন ভিনসেন্ট ভ্যান গগও স্কিতজোফ্রেনিয়ার শিকার হয়েছিল।আবার সব স্কিতজোফ্রেনিকের পক্ষ্যে খ্যাতিমান চিত্রকর বা নোবেল পুরস্কার পাওয়া সম্ভব নয়।
মানসিক প্রতিবন্ধি বলি আর পাগল বলি, এরা পরিকল্পনা করে অবস্থার শিকার হয় নাই।আমাদের ভেতর যারা অপেক্ষাকৃত বেশি স্পর্শকাতর, কখনো বা দুর্বল, কখনো বা বংশায়িত কারনে তারা সামাজিক, পারিবারিক বিভিন্ন কারনে মানসিক ব্যাধির শিকার।এদের নাম না নিতে নিতে আমরা নিজেদের নৈর্ব্যাক্তিক করে ফেলি, নিজেদের স্পর্শকাতরতা হারিয়ে ফেলতে থাকি।এই চড়দাগি নৈর্ব্যাক্তিক অবস্থা থেকেই কি আমরা ধর্ষনকারিদের সামাজিক জায়গা থেকে মেনে নেই?
চয়ন খায়রুল হাবিব
৯/০২/১৭
ব্রিটানি