Tuesday 10 September 2013

ডোরার কান্না, ক্ষেপি সংস্কৃতি ও কিম্ভুত রিপ্রেসেন্টেশানবাজেরা

আহমদ শরীফের সাথে মনোগত সংলাপ ২

প্রথম প্রকাশ ফেসবুকে নোট আকারে।২০/০৭/১১।

ডোরা মার
ক্ষেপি-সংস্কৃতিও লোক-সংস্কৃতি-সঞ্জাত পুরূষ প্রধান কৌমের প্রভাবেই বিবর্তিত!বৈষ্ণবের যেমন বৈষ্ণবি, লালন আখড়ার সাধুসঙ্গের এক প্রধান অনুষংগ 'ক্ষেপি'!লোক সংস্কৃতিকে কাল্ট পর্জায় থেকে জাতিয় পর্জায়ে নিয়ে আসা দক্ষিনপন্থি প্রতিক্রিয়াশিলতারই ফলবান লক্ষন!যে ফলটা এতে ফলে তা ইতিহাসের বিবর্তনে বিষবৃক্ষেরই ফসল!হিটলারের এভা ব্রাউন, মুসোলিনির ক্লারা পেতাচ্চি এক অর্থে ক্ষেপি!এদের প্রত্যাবর্তনের কোন উপায় এরা আর রাখেনা এবং কথিত সাধুদের গ্রাসে এদের সজ্ঞা পুরাপুরি লুপ্ত!পিকাসোর 'ডোরার কান্না' আক্ষরিকভাবেই এই ক্ষেপিদের আর্তনাদ!


ফরাসি কবি, চিত্রগ্রাহক ডোরা মারের সাথে পিকাসোর পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল কবি পল এলুয়ার!পিকাসোর বয়স তখন ৫৪, ডোরার ২৯!পরিচয়ের আগে থেকেই ডোরার নিজেকে কাটাছেড়া করবার বাতিক ছিল!এলুয়ার, পিকাসোর আরেক বন্ধু সাইকো-এনালিস্ট জাক ল্যকো, বন্ধদের অনুরোধেই দির্ঘদিন ধরে ডোরার চিকিতসার ভার নেয় এবং ব্যার্থ হয়!ডোরার সাথে পিকাসোর সম্পর্ক ছিল ৯ বছর!'গের্নিকা' আকবার সময়পর্বে পিকাসো বিচিত্র আঙ্গিকে ডোরাকে ক্যানভাসবন্দি করে!



ডোরা মার অবলম্বনে পিকাসোর কিউবিস্ট প্রতিকৃতি

পিকাসো
"For me she's the weeping woman. For years I've painted her in tortured forms, not through sadism, and not with pleasure, either; just obeying a vision that forced itself on me. It was the deep reality, not the superficial one."
"Dora, for me, was always a weeping woman....And it's important, because women are suffering machines."

ডঃ আহমদ শরীফ, লোকসংস্কৃতিঃ'বাঙলা, বাঙালী ও বাঙালীত্ব' 
''লোকসংস্কৃতি মানে কি? আমাদের দরিদ্র, পশ্চাদপদ, শিক্ষার সূযোগ থেকে বঞ্ছিত, জনসাধারনের এবং হাজার বছরের অতীতের সংস্কৃতিই লোকসংস্কৃতি!সেই অজ্ঞ্বতাকে, সেই কুসংস্কারকে মহিমান্বিত করে আজ লাভ কি?...আমাদের অক্ষ্মতা ও দিনতাকে বড় করে কি লাভ?...মাটির ঘর আর বেড়ার ঘরকে বড় করে দেখিয়ে নিজেদের জন্য এয়ারকন্ডিশানের এই আয়োজনে প্রবঞ্ছনা আছে, প্রতারনা আছে!লোকসাহিত্য ধারা নষ্ট হয়ে গেল বলে বিল্ডিং থেকে এই দরদ দেখানোত গনমানুষের প্রতি ব্যাংগ করারই শামিল।রেডিও টেলিভিশান ইত্যাদি অনেক প্রতিষ্ঠান প্রতি বছর লক্ষ টাকা খরচ করছে এই প্রহসনে।লোকের নিঃস্বতার, দুর্ভাগ্যের, নিরক্ষরতার এবং সেইসঙ্গে লোকসংস্কৃতির অবসান চাই আমরা।'('বাঙলা বাঙালী বাঙালীত্ব, আহমদ শরীফ, পৃঃ ৭৯-৮০)!

আহমদ শরীফ কে?এই সেই বির্জবান সন্তান যে এগিয়ে ছিল তার জাতির চেয়ে কয়েক হাজার বছর!১৯৬২ সনে পুর্ব পাকিস্তান ছাত্রলিগের নেতৃত্বে গঠিত 'নিউক্লিয়াস' স্বাধিন বাংলা বিপ্লবি পরিষদের সাথে শুরু থেকে শেষ অব্দি তার ঘনিষ্ট যোগাযোগ ছিল!১৯৬৫ সালে শরীফ তার 'ইতিহাসের ধারায় বাঙালী' প্রবন্ধে পুর্ব পাকিস্তানকে 'বাংলাদেশ' এবং রবীন্দ্রনাথের 'আমার সোনার বাংলা...'কে জাতিয় সঙ্গিত হিশাবে প্রস্তাব করেছিলেন!আহমদ শরীফ ঘোরতরোভাবে লোকসংস্কৃতি-সঞ্জাত জাতিয়তাবাদি রাজনিতির বিরোধি ছিলেন।

বাংলাদেশে লোকসংস্কৃতির নামে খৃস্টান মৌলবাদিদের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া ngoগুলা, লালন নিয়ে লেখালেখির তোড়ে্র সাথে আহমদ ছফা, আবদুর রাজ্জাকদের যেসব অনুসারিরা জড়িত তারা আহমদ শরীফের নাম এক্কেবারেই উল্লেখ করে না!প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এদের উথ্যান ৯০ দশকে।অবস্য এদের বিজ আরোপ করা হয়েছিল ৭০, ৮০'র সামরিক শাষনের ছত্রছায়ায়, আফগানিস্তানে সোভিয়েত দখলদারির সাময়, পাকিস্তানি সামরিক গুপ্তচর সংস্থার ব্যাবস্থাপনায়!এদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে হাজার, হাজার কোটি টাকা!৩ টা ব্যাপারে এদের উতসাহ মাদ্রাসা, মার্কসবাদ এবং লোকসংস্কৃতি!

ঢাকা ক্লাব তাদের সমস্ত প্রতিপত্তি নিয়েও গনপ্রতিরোধের মুখে রমনা পার্কে তাদের সাবেক বৈধ মালিকানা প্রয়োগ করতে পারে নাই!কিন্তু লোকসংস্কৃতিওয়ালারা সেখানে লালনের আখড়া আখ্যা দিয়ে স্থাপনা তৈরি করে ফেলেছে। ভুমিদস্যুতা'র প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ আয়োজনে নিয়োজিত লোকসংস্কৃতির কান্ডারিরা!সতিদাহ আর বাংলাতে নাই, তালাক নিয়েও লেখালেখি করা যায়, কিন্তু ক্ষেপি-সংস্কৃতির বিরুধ্বে কথা বল্লেই শুনতে হবে 'বুর্জোয়া' গালাগাল!আর যখন 'বুর্জোয়া' আখ্যা দেয়া যায় না, তখন আহমদ শরীফদের বলা হয় 'মুর্তাদ'!কারা বলে? আর কারাই বা ইন্ধন যোগায়?

দেখা যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষক হলিউডের বানানো 'স্লাম ডগ মিলিয়নিয়ার্স', 'সিটি অব জয়ের' সমালোচনা করতে গিয়ে 'আধিপত্যবাদ' শব্দটা ব্যাবহার করে নিজেদের বিড়ম্বনা ঢাকে, তারাই লোকসংস্কৃতিকে জাতে তোলার আন্দোলনের পুরোধা!এই শিক্ষকেরাই আত্মপরিচয়ের সঙ্কট আরোপ করে!জাতিগত আত্মনিয়ন্ত্রনের অধিকারের পর বাংলাদেশে নারির, ব্যাক্তির এবং সংখ্যালঘু কৌমের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারছে না এই লোকসংস্কৃতিওয়ালাদের কারনেই!থিয়েটার মঞ্ছ, মিডিয়াতে এদেরই প্রতাপ!যা গুরুত্বপুর্ন নয় দঙ্গল বেধে এরা তাকে গুরুত্বপুর্ন করে তুলে!এরা এইক্ষনে বলে যে 'মেহেরজানে' মুক্তিযুধ্বের প্রতিকগুলার মিসরিপ্রেসেনটেশান হয়েছে; আবার যেই শামসুর রাহমান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিকগুলাকে করে তুলেছে সাস্বত সেই শামসুর রাহমানকে গাল পাড়ে ইহুদি তোষনকারি বলে!যখন তথ্যের বিকৃতি ধরা পড়ে যায় তখন বলে উঠে সাধু, সাধু এবং গঠন করে বাউল সুরক্ষা কেন্দ্র!আমরা বুঝে না বুঝে সেখানে যাত্রা, জারি, পিঠা, তালপাতার পাখা নিয়ে আগড়ম, বাগড়ম করতে থাকি!এই আগড়ম, বাগড়ম দেখায়ে টাকা চাওয়া হয় এখানে, সেখানে এবং টাকা আসেও!একটা পরিক্ষিত এবং ফলদায়ক মডেল!কিন্তু আমি নেবনা!কেন নেবনা?

সেই যে সেই আহমদ শরীফের স্মরন আবার, মরনোত্তর চোখ এবং দেহদান করে গিয়েছিলেন তিনি!'অসিয়তনামাতে' লিখেছিলেন, 'চক্ষু শ্রেষ্ঠ প্রত্যংগ, আর রক্ত হচ্ছে প্রান প্রতিক!কাজেই গোটা অংগ কবরের কিটের খাদ্য হওয়ার চেয়ে মানুষের কাজে লাগাইত বাঞ্ছনিয়'

দেখছিলাম ডোরাকে নিয়ে আকা পিকাসোর ছবিগুলা, পড়ছিলাম আহমদ শরীফ, চোখে পড়লো , ডঃ মাহবুব পিয়ালের লেখা একটা নোট!বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষনে বিজ্ঞ্ব মাহবুব বড় মাপের এক  বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এবং একসময়ের সাহিত্যের সংগঠনে সক্রিয়!মাহবুব লোকসঙ্গিতের একজন নিষ্ঠ চর্চাকারি এবং এ-নিয়ে একটা রেডিও অনুষ্ঠানও পরিচালনা করেন।নোট'টা নিয়ে এখানে কিছু বলতে চাই।

কোথায় লালনের লালন আর কোথায় "মনের মানুষে"র লালন।।ডঃ মাহবুব পিয়াল
 July 18, 2011 at 7:41pm

''কিছু দিন আগে ঘরে বসেই 'মনের মানুষ'-এর ডিভিডি দেখলাম। গৌতম ঘোষের ছবির প্রতি আমার সমীহ থাকলেও যাঁর গল্প নিয়ে ছবি হয়েছ তাঁর নাম জেনে আগ্রহে ভাটা পড়েছিল। তাই আর যাইনি প্রেক্ষাগৃহে...... ছবির দৃশ্যায়ন আর সব কারীগরী নৈপুণ্য মন কেড়ে নেয়, গানের ব্যবহারও প্রাণ জুড়ানো, তাই এই ছবি ভিনদেশে পুরষ্কারও পায়। এতকিছুর পরও একটি নৈতিক প্রশ্ন উঠতেই পারে। এ ছবি লালনকে কতটুকু প্রতিনিধিত্ব করে? আজকাল “politics of representation” বিষয়টি কিন্তু সর্বত্রই গুরুত্ব পেয়ে চলেছে । “Slum Dog..” নিয়ে খোদ ভারতেইতো কত প্রতিবাদ হলো। ‘মনের মানুষ’ নিয়ে অবশ্য প্রশ্নটি ওভাবে উঠেনা।''

মাহবুব প্রথমেই বলেছেন যে তিনি ভিডিওতে 'মনের মানুষ' দেখছেন!আমি দেখেছি বড় পর্দায়!যে 'কারিগরি নৈপুন্যের' কথা মাহবুব বলতে চাইছেন, তার সবকিছুকেই আমি খারিজ করে দেব!কস্টিউম, মেকআপকে যদি আমরা চলচ্চিত্রের একটা বড় কারিগরি দিক ধরি, তাহলে একটা পিরিয়ড-ছবিতে লালন, শিরাজ সাইর গায়ে মাড়ভাঙ্গা ইস্তারির ভাজওয়ালা ফতুয়া, নিচুমানের পরচুলা কিছুতেই কারিগরি নৈপুন্যের স্বাক্ষর হতে পারেনা!ক্যামেরার কাজও ভিউকার্ড ফটোগ্রাফি!চলচ্চিত্র শিল্পের কুষল-নৈপুন্যের একটা শাখাতেও 'মনের মানুষ', সমকালিন চলচিত্রের ধ্রুপদি নির্মান 'স্লাম ডগের... ' সাথে তুলনিয় নয়; যদিনা টেনেহিচড়ে 'রিপ্রেসেন্টেশান' জাতিয় একাডেমিক টার্মিনোলজি এই তুল্যমুল্যে আরোপ না করা হয়!

মাহবুব বলছেন, 'আজকাল “politics of representation” বিষয়টি কিন্তু সর্বত্রই গুরুত্ব পেয়ে চলেছে । “Slum Dog..” নিয়ে খোদ ভারতেইতো কত প্রতিবাদ হলো। ‘মনের মানুষ’ নিয়ে অবশ্য প্রশ্নটি ওভাবে উঠেনা।'
কোন 'খোদ ভারতে' স্লাম ডগ নিয়ে কত প্রতিবাদ হ'লো?কংগ্রেস, বিজেপি, ভারতিয় কমিউনিস্ট পার্টি কি এই ছবির প্রতিবাদ করেছে?না কি কোলকাতার আনন্দবাজার, সানন্দা এর প্রতিবাদ করেছে?কেউ, কেউ যদি ঐ ছবির সমালোচনা করেও থাকে, তা কি 'খোদ ভারতে কত প্রতিবাদের' সমার্থক?আমি নিজে এ-অব্দি বাংলাদেশের কয়েকজন অতি আতেলের কথিত 'politics of representation' ভিত্তিক 'স্লাম ডগে'র নেতিবাচক সমালোচনা ছাড়া, ভারতিয় বা আন্তর্জাতিক নেতিবাচক সমালোচনা পড়ি নাই!

'পলিটিক্স অব রিপ্রেসেন্টেশান'টা কি'? এটা কি মাওবাদ? নক্সালবাদ?মওদুদিবাদ?কোনো, কো্নো NGO আর প্রাইভেট বা পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো, কোনো লোকজন কেন বেশি, বেশি করে এই টার্ম ব্যবহার করছে? 'Politics of representation' অনুসরন না করার জন্যই কি আহমদ শরীফ'কে মুর্তাদ বলা হ'লো, আইভি রহমান নিহত হ'লো, হুমায়ুন আজাদ আক্রান্ত হ'লো?

আমরা যদি একটা লম্বা দাগের একপাশে ফতোয়ায় নিহত হেনার লাশ এবং সিমান্তবর্তি তারকাটার ব্যাড়ায় ঝুলন্ত ফালানির লাশের দিকে তাকাই তাহলে দেখব যে যারা ''Politics of representation' বলে জপছে, তাদের মুল লক্ষ্য ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক একটা সন্ত্রস্ত পর্জায়ে রাখা এবং এই সন্ত্রস্ততা থেকে যতরকমে পারা যায় সাংস্কৃতিক, রাজিনিতিক সুবিধা উসুল করা!লক্ষ্যনিয় যে বাংলাদেশের বাংলা একাডেমিতে আরবি এই, সেইর অনুবাদে এবং লোক সংস্কৃতির বিকাশে সায়মন জাকারিয়াদের হাতে যে পরিমান তহবিল তার তুলনায় বিশ্ব সাহিত্যের অপরাপর ভাষাতে অনুবাদের তহবিল অত্যন্ত অপ্রতুল!বাংলা একডেমির প্রাতিষ্ঠানিক পত্রিকা, 'উত্তরাধিকার' সম্পাদনা করছে জামাতের সুপারিশে চাকুরি পাওয়া এক কর্মকর্তা!এটাই কি ''Politics of representation'?খামাখা 'স্লাম ডগ...'নিয়ে টানাটানি!
মাহবুব বলছে, “Slum Dog..” নিয়ে খোদ ভারতেইতো কত প্রতিবাদ হলো। ‘মনের মানুষ’ নিয়ে অবশ্য প্রশ্নটি ওভাবে উঠেনা।''কেন ঊঠেনা?

কারন  লোকসংস্কৃতিকে 'politics of representation' বলনেওয়ালারা লালন'কে দুই বাংলার শ্রেষ্ঠ কবিতায় স্থান দিতে চায়!তা না হলে না কি সেই সঙ্কলন বাংলাদেশের 'জাতিও কবিতার' প্রতিনিধিত্বশিল হবে না!এরা কবিতার আলোচনায়, ফিল্মের আলোচনায় যেভাবে 'রিপ্রেশেন্টেশান', 'জাতিয় বুর্জোয়া', 'মুক্তিযুধ্বের আধিপত্যবাদি ব্যাখা' এসব শব্দবন্ধনি নিয়ে আসে তা এদের নান্দনিক সমঝদারিত্বকে করে তোলে শর্তাধিন, খন্ডিত এবং পশ্চাদপদ রাজনৈতিক শিবিরের স্বার্থবুদ্ধিজাত।

আনারকলিদের উদ্ধারে, কাদম্বরীদের কান্না থামাতে, ক্ষেপি-সংস্কৃতির বিনাশে আমাদের নারিবাদেই আশ্রয় নিতে হবে।লোকসংস্কৃতির কেনাবেচাকারি রিপ্রেশেন্টেশানবাজ পুরুষ এবং নারিগন সর্বার্থে পুরুষ!কিন্তু পিকাসো নয়!


চয়ন খায়রুল হাবিব
২০/০৭/১১
ব্রিটানি