কবি বিনয় মজুমদার।জন্ম, ১৭ সেপ্টেম্বার, ১৯৩৪, বর্মা।দেহত্যাগ, ১১ ডিসেম্বার, ২০০৬।
|
বিনয় মজুমদার শ্রদ্ধাভাজনেষুঃ আশিতমো জন্মদিনের অর্ঘ্য
অনেক অনেক আমলকি এবং রোদে-রজনে-টলটলে
আমাদের সবচেয়ে কাছাকাছি বিনয় মজুমদারের অসংলগ্ন-অঙ্কপাতন
সংগলিপ্সু-সংলগ্নতার আরাধ্য প্রতিমার নাম গায়ত্রি স্পিভাক
আমার মেয়ের নাম এলিস এবং ছেলের নাম মাতিস
বিনয়ের আসলে কোন ছেলে মেয়ে ছিলো না
গায়ত্রিরও কোন ছেলেমেয়ে ছিলো না কিন্তু সে গংগোত্রির তিস্তা
আমাদের সকলের সাথে গায়ত্রির কিন্তু মনে মনে পাল্টিঘর রিশ্তা
তাহলেতো শব্দের ইতিহাস জানতে হয় শব্দের সালতামামির আগে
তারপর 'চাকা'র** ভিতর চাকাগাড়ির তাল লয় মুদ্রা জাগেঃ অন্ত্যমিলেনা রেঙ্গুন
বর্মা্র রেঙ্গুনে বিনয়ের জন্ম;
আমার জন্ম বাড় ঢাকার লালবাগে
বিনয়ের বাড় চব্বিশ পরগনায় আমরা ভিনদেশি স্ট্যাম্প এবং প্রতিবেশি ক্যাম্প
দেশভাগের যুক্তিবোধ আর বোধের মুক্তি ঠিক সমান্তরাল চলে না
দোদুল্য প্রশ্নগুলো হরেদরে যখন নিজেদের ভিতর বোঝাপড়া সারছিলাম
তখন তা লাইনচ্যুত করতে অনেকে অনেকরকম তুক তাক কুফুরি কালাম
বশিকরনের ইন্তেজাম কিন্তু আমরা ভালবাসতাম সৈন্ধব লবন মাখা কালোজাম
কে একজন জীবনানন্দকে বলেছিলো, 'শুধ্বতমো কবি'
আমাদের খটকা লেগেছিল।ফুলস্টপ।আমাদের খটকা লেগেছিল।
পিউরিটানিসমতো জীবনানন্দ বোদলেয়ার এলান পোর নয়
জীবনানন্দকে শুদ্ধ্বতাবাদি বানাতে উহারা শুদ্ধতার আলোয়ান চাপালো
এমনকি পরাবাস্তবতার ওপর
এটা ছিলো পঞ্চাশের প্রাগ্রসরতা ঠেকাতে দক্ষিনপন্থিদের স্ট্র্যাটেজি
জীবনানন্দকে ছেড়ে আসা মানে কি একজন বাই ডিফল্ট শিল্পের শুদ্ধতায় গররাজি
শামসুর তিরিশ ছাড়ালো হেচকা টানে মাহমুদ ঘুরপথে ছাড়ার আগে জানালো
তিরিশের দেশ নাই ওদের আত্মপরিচয়ের সংকট
সঙ্কট কিন্তু আসলে তিরিশের নয় বরং বিভক্ত বাংলাতে প্রকট
জানো নাই কি কবিদের শিল্পিদের দেশ নাই কেবল নন্দনের সিমান্তচৌকি
অঙ্কের অলিক বাতিঘর ধিকি ধিকি পিঞ্জরে বসিয়া শুক
শুশুক নাচায় শশুকির না দেখা স্বপ্নের গহিন ঝাড় ফুক
স্বভাবসুলভ রসিকতা বশে ষাটের ঘটনাটা যত গর্জে তত বর্ষে না
দুই বাংলা একসাথে থাকলে
ব্রক্ষ্ম আর মামদো ভুতের টেনশানে নন্দনের নান্দিভুত জমতো ভাল
পাশে বসা বিনয় তার ইঞ্জিনিয়ারিং মাপামাপি করে সনেটের চোদ্দ লাইনে
আমাদের জানালোঃ ওগো পরবর্তি প্রজন্মের তরুন তুর্কি
জীবনানন্দ আসলে ''দ্বিধা ও সংশয়ে দোলা'' স্কাইস্ক্র্যাপারের চিলেকোঠাঘর
বহুতল ভবনের উপর বিজলি-চমক-ধারি লোহাদন্ড অতিব জরুরি
ষাটের পাতা ফাদ থেকে বের হবার আরতো কোন পথ সত্তর রাখে নাই
হরিতকি মানেতো নিতসেঃ একাত্তরের রক্তাক্ত বেলুন আকাশকে মাটিতে টানে
বিনয়ের আতুরঘরঃ রেঙ্গুন-প্যাগোডাগুলো উড়তে পারে না বেলুন আদলে
পা তাদের বাধা বর্মাতে বাংলাদেশে ফসিল-ফুয়েল এবং দুস্বপ্নের সামরিক শিকলে
গায়ত্রি স্পিভাক কি তাহলে জাতিস্মর বর্মি নেত্রি অং সাং সু কি
খুলির ভিতর খুলি একটা হারিকেনকে সামনে নিয়ে চলে
আসুন 'অঘ্রানের অনুভুতিমালার' কবিকে শুভ জন্মদিন বলে হাততালি মেরে
আকাশে বারুদ ফাটাই আজ বিশ্বায়িত বাঙ্গালি সকলে
চয়ন খায়রুল হাবিব
১৭/০৯/১৩
ব্রিটানি-ফ্রান্স
ছবি, নাসির আলি মামুন।২০০৭, শিমুলপুর, পশ্চিমবংগ।
বিনয় মজুমদার অব্দি বাংলা ও বিশ্বায়িত সনেটের বিবর্তন
**বিনয় মজুমদারের কবিতাগ্রন্থ 'ফিরে এসো চাকা' শিরোনাম থেকে
'ডৌল : জুলেখার জেরা পর্ব' (২০১৫) আমার তৃতিয় কবিতা/অনুবাদ কবিতা/নাটক সংগ্রহে গ্রন্থবদ্ধ।চখাহা।