Tuesday 30 September 2008

জসিমুদ্দিন রোড থেকে বেতার বাংলাদেশঃ হত্যাকান্ড কখনোই নিখুত হতে পারে না

পুর্বকথনঃ

বাংলা সাহিত্যের তলানিতে জমা প্রিটেনশানের গাদ নাড়িয়ে পানি একটু ঘোলা করা যাক!

সাহিত্যিক -প্রিটেনশানের শুরু সাহিত্যের ছাত্র ও অধ্যাপকদের হাতে।রবিন্দ্রনাথ এদলের নয়।কিন্তু তিরিশের সব কবি এ-দলের।তিরিশের দশকে বুধ্বদেব বসুর নেতৃত্বে জিবনানন্দসহ অন্যান্য অধ্যাপক কবিদের সবচেয়ে বড় অপরাধ এই যে রবিন্দ্র-নজরুল ধারা থেকে নিজেদের স্বতন্ত্র করে তুলতে একযোগে তারা কবি জসিমুদ্দিনের মৌলিকতা নিয়ে কখনোই কোন কথা বলেননি। তাকে সাহিত্যের মানচিত্র থেকে উতখাত করবার চিরস্থায়ি বন্দোবস্ত করেছিলেন তিরিশিও কবিকুল।

জ়সিমুদ্দিনই সে সময় একমাত্র রবিন্দ্র পরবর্তি কবি যিনি বাংলা ভাষার সহজিয়া মুলধারার সাথে আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছিলেন “নক্সি কাথার মাঠ” , “সোজন বাদিয়ার ঘাট” এর মত ব্যলাড জ়াতিয় কাব্যে।বিশ্ব-কবিতায় লোরকা তখন তার গাথা ও ব্যলাড ধর্মি নাটকে যা করছিলেন তা জসিমুদ্দিনেরই ফোকলোর ঘরানার।হতে পারে তিরিশের কোন অধ্যপকের হাতেই লোরকা পৌছোয়নি।কিন্তু পঞ্চাশের, ষাটের, সত্তরের ঢাকায়, কোলকাতায় লোরকা পৌছনোর পরও জ়সিমুদ্দিনের সাথে লোরকার যোগাযোগ চিন্নিত না করে অধ্যপকেরা ব্যস্ত থাকেন তিরিশিও কৌশলে চোরাগোপ্তা হামলায়। ইংরেজি বিভাগের যে সব ছাত্র গাথার আঙ্গিকে লেখেন তারা লোরকার দুয়েন্দের নাম নেন, জসিমুদ্দিনের নাম বলতে লজ্জা পান।হিনমন্যতা বৈ কি!

তিরিশিও হামলায় রবিন্দ্রনাথ নিশ্চিত একই সাথে বিব্রত ও ভ্যবাচেকা খেয়ে গিয়েছিলেন।জ়সিমুদ্দিন ছিলেন তার ছাত্র।তিনি নিজে লালন, হাসনে মুগ্ধ; অঢেল নিয়েছেন বাংলার ও বিশ্বের লোক কাহিনি থেকে; জসিমুদ্দিনকে তিনি আদর করে নাম দিয়েছিলেন “পল্লি কবি”।এতে হায়েনার দঙ্গল যে কি রকম উৎকট আনন্দ পেয়েছিল তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু কোন হত্যাকান্ডই নিখুত নয়।জ়সিমুদ্দিনের ব্যপারে তিরিশিও কবিকুল এবং রবিন্দ্রনাথের অপর দুই কৃতি গদ্য প্রয়াসি ছাত্র মূজতবা আলি ও আবূ সইদ আইউবের নিরবতাই বাংলা সাহিত্যের মুলধারাকে ব্যহত করবার ষড়যন্ত্রি হিসেবে তাদের সন্দেহভাজন করে।অতি ভক্তি কিসের যেন কুলক্ষন?

তিরিশের অধ্যপকেরা জ়সিমুদ্দিনের প্রতি যা করেছিলেন, ষাটের আধ্যপকেরা তা করলেন কবি ওমর আলির সাথে।কিন্ত এবারও হত্যাযগ্বের চিন্ন পেছনে রেখে গেলেন হত্যাকারিরা।

পরাবস্তবতা বাংলার ছাত্রদের হাতে হয়ে ওঠে বিশ্বাসের সিড়ি।হা হতোস্মি!প্রাগাধুনিকতার জিন্দাবাদ দেয়া হয় এমনকি আধুনিকের চেয়েও রদ্দি আঞ্চলিক ভাষায়!এরা লোক সাহিত্যের সাথে আধুনিকতার এবং প্রাগাধুনিকতার পরম্পরা ধরতে ব্যর্থ।কারন তাদের গুরুগন এখনো স্বিকার করতে রাজি নন যে রবিন্দ্র-নজরুল সাহিত্যের সমকালিন প্রয়োগধর্মিতা বুঝতেই আমাদের নিবিড়ভাবে এবং বিশ্বসাহিত্যের আলোকে জসিমুদ্দিন, ওমর আলিদের নিয়ে ভাবনা জরুরি হয়ে উঠেছে।

প্রাককথনঃ

তিরিশ থেকে ষাটের কবি ও অধ্যাপকদের হাতে বাংলা কবিতার যে কৃত্রিম সমিকরন দাড়িয়েছিল তা প্রায় হ্যচকা টানে সত্তরে খসে পড়বার কথা।বাআন্নর ভাষা আন্দলন এবং একাত্তরের মুক্তিযূধ্ব এলেন পো, বোদলেয়ার, এজরা পাউন্ড থেকে ধার করা বুনিয়াদ ধ্বসিয়ে দেবার কথা।কিন্তু রবিন্দ্রনাথের সচিব, উপসচিব বেশে যারা একসময় জ়সিমুদ্দিনকে
নিয়ে কথা বলাকে আন-স্মার্ট বলে নির্দেশনা দিয়েছিলেন তাদের অনুগত ছাত্ররাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ে বাংলা ও ইংরেজি বিভাগে জাকিয়ে বসে আছে।এদের অনেকেই প্রগতিবাদি সরনিতে সদম্ভে হাটা চলা করেন।বা হাতে ছাত্রিকে চড় মেরে ডান হাতে নারিবাদি কলাম লেখেন।এদের স্ববিরোধি হাতে গড়া ভাল ছাত্রদের দল বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রকে শক্তিশালি করেন আর খারাপ ছাত্ররা পরিচিত হন সাংবাদিক হিশেবে।সবাই এক কলকির কমরেড!

যারা দুয়েন্দে দুয়েন্দে করতেন তাদের উত্তরসুরিরা বব ডিলানের নাম নেয়া শুরু করলেন।কিন্তু আজম খান যে জসিমুদ্দিন রোডেরই বাসিন্দা তা জেনেও না জানার ভান করেন।

যা ছিল ফোকলোর তাই গড়াতে গড়াতে আরবান ফোক।শিত সকালের ভাপ ওঠা তালের রস খেয়ে ফেলিনি দর্শন।কিন্তু এই সহজিয়া যাত্রাপথকে গেয় বলে নকল শোনাকে আসল শোনা বলে গছিয়ে দেবার চালিয়াতিটা করলো কারা?

নাম ধরে ধরে এগোই।আমাদের সময় সবচেয়ে সফলভাবে চালিয়য়াতিটি করেছে আব্দুল মান্নান সৈয়দ এবং আব্দুল্লাহ আবু সাইদ।ঢাকা ও কোলকাতাতে প্রতিপত্তিশালি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে জোগাজোগের সুবাদে এ-দুজন এমন একটা মেরুকরন দাড় করিয়েছে যে এদের সাথে না থাকলে কোনরকম প্রাতিষ্ঠানিক স্বিকৃতি অসম্ভব।দু, মাথাওয়ালা স্ফিংস।
আর এ-স্ফিংসের রিমোট কন্ট্রোলার হচ্ছে সৈয়দ আলি আহসান নামের সাক্ষাত শয়তান।এটি হচ্ছে সরেশ কবি ধরে ধরে নিকেশ করবার ত্রয়কা।এদের শিকারের তালিকাও বেশ রমরমাঃ আল মাহমুদ, আবিদ আজাদকে এরা কাটা লেজ় মুড়োসহ গিলে ফেলেছিল।আল মাহমুদের অবস্থা হছ্যে তিমিতে গেলা নুহ নবির মত।ওর লেখা আত্মজিবনি হচ্ছে সারা গায়েমুখে বমি মাখা লেংটা একটা লোকের আত্মজিবনি।

আসমানি কিতাবধারি এই বলয়ের বাইরে থেকে যারা কবিতা চর্চা করেছে তাদের অনেকেই কবিতায় শ্বার্বভৌম হলেও দর্শনের ঘাটতি পূরন করতে চেয়েছেন কখনো কলা কৈবল্যবাদে কখনো মার্ক্সবাদের আশ্রয়ে।রফিক আজাদকে প্রথম গোত্রে, নির্মলেন্দু গুনকে ফেলা যাবে দ্বিতিয় গোত্রে।আবার দুই গোত্রের বিবাদ ঘুচিয়ে কখনো কখনো এরা স্বতস্ফুর্তবভাবেও লিখেছেন, যদিও তা কম।

তিরিশ থেকে ষাটের পুরনো সমিকরনকে সবচেয়ে সার্থকভাবে পাশ কাটিয়েছেন শামসুর রাহমান।জসিমুদ্দিনেরই ব্যলাড শামসুরের হাতে পেয়েছে সরাসরি রাস্তা থেকে উঠে আসা প্রতিবেদনধর্মি বর্ননার মাত্রা।
শামসুরের সত্তর পরবর্তি কবিতাগুলো এই একপেষে, একরৈখিক নান্দনিকতা থেকে সরে আসে।সমকাল হয়ে ওঠে ওর কবিতার বহিরংগ, ব্যলাড তাতে যোগ করে অন্তরংগ গিতলতা।আবুল হাসান যেখানে উকিঝুকি দিচ্ছিলেন, শহিদ কাদরি যেখানে আটকে গিয়েছিলেন রাইটার্স ব্লকে, শামসুর শেশ কবিতাটি পর্জন্ত সেই বর্ননাকে খোলামিলের দোলাচলে এগিয়ে নিয়েছেন নন্দন-নিরপেক্ষ কবিতার স্বার্বভৌমে। নন্দন-নিরপেক্ষ?একটু বিস্তৃত হওয়া যাক।

লালন ও আর সব ভক্তিমার্গি লোকাচারের সাথে দরবারি ধ্রুপদ এবং চার্চ মিউজিকের স্বরলিপি মিশিয়ে রবিন্দ্রনাথ যে-একান্ত-ভারতিও-নন্দনের গোড়া পত্তন করেছিলেন;নজরুল যাতে সেনানি জোশ যোগ করেছিলেন; তিরিশের কবিদের রবিন্দ্র-নজরুল বিরোধিতায় তা গড়ায় একেপেষে পশ্চিমি-নন্দনের সিমানায়।অন্যদিকে ফররুখ আহমেদরা দাড় করিয়ে ফেলেছে ইসলামি আদর্শ ভিত্তিক নন্দন যা নজরুলের ভঙ্গিটূকূ নিয়েছে নজরুলের ধর্ম-নিরপেক্ষ আত্মাকে বাদ দিয়ে।

কমিউনিস্ট পার্টির কবি-কর্মিদের সেচ্ছাসেবক সমাজ বাস্তবতার বাকোয়াজি; সুভাস, সমর সেনদের মুখোমুখি কোলকাতায় বিনয়, শক্তি, সুনিলদের কাছে তিরিশের সমিকরনগুলো যে কারনে স্বস্তিদায়ক মানে হয়েছে; বায়ান্নর এবং একাত্তরের মুল্যবোধের প্রতি আন্তরিক বাংলাদেশের কোন কোন কবির কাছে সেই সমিকরন একই কারনে হয়ে উঠেছে আস্বস্তিকর, গূমোট।তিরিশের কবিদের দেশবিহিন ধরে নিলে, পঞ্চাশ,ষাটের বাংলাদেশি কবিরা একটা সুনির্দিষ্ট দেশ পেয়ে গেছে।নতুন দেশ মানে নতুন শব্দ, নতুন সমিকরন।কোলকাতার কবিরা যখন ভারতিও নিরাপত্তার ভেতর নিশ্চিন্তে দেশবিহিন উপনিবেশিক তিরিশিও নান্দনিকতার বিকাশকেই তাদের গন্তব্য মনে করেছে,তখন ধবংশস্তুপের ওপর দাঁড়ানো আর বাদ বাকি মানুশদের মতই বাংলাদেশের কবিদেরও ছিড়ে, ফুড়ে যাওয়া শব্দগুলোকে আবার কুড়িয়ে আনতেই রাস্তায় নামতে হয়েছে।সমিকরনের আয়োজন তখন বিলাসিতা।

জাতিয়তাবাদের জুজু, ইসলামের নৈর্ব্যাক্তিকতা, তিরিশিও দেশবিহিনতা সব কিছু ছাপিয়ে কবিতার স্বাশ্বত আত্মনিরপেক্ষ বাকমহিমার প্রাথমিক বোল ফোটাতেই নির্মলেন্দু গুন, রফিক আজাদদের অতিকথনের আশ্রয় নিতে হয়েছে।বোল ফুটলো; আর তাকে সংজত কন্ঠশ্বরে, দৈনন্দিন ব্যক্তির জয় পরাজয়ের বর্ননাধর্মি গাথায়ও রুপান্তর করেছে ঐ রফিক আজাদ, নির্মলেন্দু গুনই।কোলকাতায়ও এ-সময় ছেলেমানুশি হিপি হই চই হয়েছে।কিন্তু তা নিয়ে ম্যডিসন স্কয়ারে কোন কনসার্ট হয় নাই।স্বাধিনতা বাংলাদেশকে উদোম করে দেখালো সে কতটুকু বিপন্ন।সম্পন্নতায় যেতে অনিবার্জভাবেই নন্দন-নিরপেক্ষতা তৈরি হল।এই জাত্রাপথে একই কবি অনায়াসে পাশ বদল করে লিখে ফেলছে "আজ রোববার , আজ ম্যন্ড্রেক্স..." এবং "হুলিয়া' র মত কবিতা।

বাংলা কবিতার ইতিহাসে এই নন্দন-নিরপেক্ষ সাময়িক জায়গাটি গুরুত্বপুর্ন এ-কারনে যে এর পরের পর্জায়ে অনেক কবিই ফিরে গেছেন কলা কৈবল্যবাদি পুনরাব্রৃতিমুলক অনুশঙ্গে কিম্বা জায়নামাজে কিম্বা দুটোতেই একসাথে।

এক্কেবারে খাস বাংলাদেশের ব্যলাড বা গাথাধর্মি কবিতাকে এপিক-বর্ননার পরিনতিতে নিতে শামসুর ছাড়াও ছোট তরফে মুহাম্মদ রফিক, আবিদ আজাদ এবং রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লার নাম করতে হবে।এদের মধ্যে শামসুর রাহমান, আবিদ আজাদ, রুদ্র প্রয়াত।আবিদ আজাদ মাণ্ণান সৈয়দের পাল্লায় পড়ে চলে গিয়েছিলেন জান্তার ছোড়া কবিতার জলসায়।কিন্তু জসিমুদ্দিনের ফোকলোর আরবান ফোকে গড়িয়ে নিয়েছে যে ভিড় উপচানো বাংলাদেশি রেলগাড়ি সেখানে নির্মলেন্দু গুনের পাশাপাশি আবিদ আজাদের নামও নিতে হবে।

যাক বলছিলাম এদের আন্তরিক কবিতা চর্চার বাইরে দার্শনিক ঘাটতির কথা যেখানে চালিয়াতেরা সুই হয়ে ঢূকে ফাল হয়ে বেরিয়ে গেছে।এদের আরেকটি ঘাটতি হচ্ছে মনস্তত্ত্ব।মুহাম্মদ রফিকের "কপিলা" কবিতাটা লেখবার প্রনোদনা সম্পর্কে বলা রফিকেরই মন্তব্য নিয়ে আমি আর্টস.বিডি...তে লিখেছিলাম।যে প্রশ্নগূলো আমি তখন ঊঠিয়েছিলাম সে-সবের উত্তরের ওপরই নির্ভর করছে সামনের দিনগুলোতে আবার কি আরবান ফোক নৈর্ব্যক্তিক প্রেমের কবিতায় পর্যবসিত হবে কি না?রফিকের মন্তব্যসহ আমার প্রতিক্রিয়া পুরোটাই এখানে তুলে দিলামঃ

মুহাম্মদ রফিকঃ‘অসচেতন সচেতনা বা সচেতন অসচেতনা সর্বপ্রকার সৃষ্টিশীলতার আদি ও মূল প্রণোদনা কবিতারও।’

ভয়ংকর মন্তব্য। ‘স্বয়ংক্রিয়’তার বিপরিতে এ লাইনটিতে ‘সর্বপ্রকার’র‘মূল’ ও ‘প্রণোদনা” শব্দগুলোর ব্যবহার আমার প্রিয় লেখক , নিউরোলজ়ির গুরু
অলিভার স্যক্সকে নিশ্চিত অস্বস্তিতে ফেলে দেবে।

১) রফিক স্বৈরতন্ত্র বিরোধি।অন্যদিকে এজরা পাউন্ড ঢাকঢোল পিটিয়ে হিটলারের নারকিয় স্বৈরতন্ত্রের পুজারি।সুতরাং ব্যক্তির রাজনৈতিক অবস্থান কবিতার প্রনোদনায় প্রভাব ফেলতেও পারে, আবার নাও ফেলতে পারে।কালের মুখপাত্র হয়েও কবিতা কাল -নিরপেখ্য হতে পারে।

২) ‘অসচেতন’ ‘অসচেতনা’ …Archaic উপলব্ধিজ়াত আত্মরক্ষামুলক জান্তবতাগুলো প্রণোদনার প্রাথমিক স্তর , প্রধান বা মুল নয়।এই শিশুসুলভ স্তরে অনেকে নিরিহভাবে আটকে যেতে পারে।এদের আমরা প্রতিবন্দি বলি।আবার অনেকে এই প্রাথমিক স্তরের সাথে উচু স্তরের নান্দনিক ছদ্মবেশ ধারন করতে পারে।হিটলার ও হানিবল লেক্টার এর দৃষ্টান্ত।

৩) কবিতার রহস্যময়তা আর ভুডু শিল্পের কুহেলিকা এক হতে পারে কি?

৪) সগ্যা ও সংগার লড়াইএ মেধা ও দখ্যতার নিরিখেই মানুষ অন্যান্য জন্তু থেকে আলাদা একই নিক্তির কারনেই সবাই গাড়ি চালানো শিখতে পারলেও সবাই ফরমুলা ওয়ানের প্রতিদ্বন্দি হতে পারে না।

৫)দখ্যতা ও মেধার পর আসে অনুশিলনের প্রয়াস।এতে কে কি রকম প্রাতিষ্ঠানিক, সামাজিক সহায়তা পাবে তার ওপর নিরভর করছে চুড়ান্ত উতকর্ষ।ভ্যন গগ বা জন ন্যশ কিন্তু স্কিতজোফ্রেনীয়ার কারনে মহাশিল্পি বা মহাগনিতবিশারদ হন নি। হয়েছেন, কেন না মেধা, দখ্যতা নিরনিত হবার পর অনুশিলনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে প্রাথিশঠানিক ও পারিবারিক সেবা পেয়েছেন নিরন্তর।

৬) দ্রস্টব্য যে উপমহাদেশের সব বিস্ববিদ্যলয়গুলো বিশ্বের অন্যান্য অনেক বিশ্ববীদ্যালয়ের মত খ্রিস্টান জাজকদের হাতে তৈরি।নান্দনিক শিল্পের অনেক শাখাতেই এখনো খ্রিশটাণী ‘ Gods Gift’ধারনা চালু রয়েছে।এই দৈব-ব্রাম্যন্যবাদের সাথে শিল্পের ও শিল্পির অস্তিত্বের সংগ্রাম আত্যন্তিকভাবেই সচেতন।


ওস্তাদের মাইর শেশ রাইতেঃ

বালাডের ওপর মুহুর্মুহু চোরাগোপ্তা হামলার তথ্য উদঘাটন করতে গিয়ে, ভাড়াড় ঘরে পেয়ে যাই একের পর এক কঙ্কালের হদিশ!মূহাম্মদ রফিকের কাছে তোলা প্রশ্নগূলো ছিল অনেক দিন ধরে লালিত সমিকরনেরই রবাহুত উস্কানি।সেই উস্কানি থেকেই ভাবতে শুরু করি যে এমনত হতেই পারে না যে আমি যেরকমটা ভাবছি সেরকমটা আর কেঊ ভাবেনি!যে লেখাগুলোর সাথে, যে লেখকদের সাহচর্জে আমি বেড়ে উঠেছি সেগুলোকেই আবার আষ্ঠেপৃষ্ঠে পড়তে শুরু করি!

আবিস্কার করি আমার গাথা ও এপিকের সমিকরনে নাগরিক মাত্রিকতায় সবচেয়ে জরুরি কবি হয়ে ঊঠছে মূশ্তাফা আনোয়ার।সে আরেক লম্বা হত্যযজ্ঞ্ব!আমি "তুত" , "কোন ডাকঘর নেই" সতরশোতমোবার পড়ে শেশ করি।বাংলা বালাড আর কখনোই চরাক্রান্ত হবে না বুঝতে পারি।বুঝে যাই কোন শক্তিবলেঃ মনস্তত্ত্ব ,নান্দনিক-দেহতত্ত্ব এবং অস্তিত্ত্ববাদি দর্শনের কোন মিশেল-সালসায় বুদ মূস্তাফা মুক্তিযুধ্ব পরবর্তি কোন মেরুকরনেই জড়িত হয়ে পড়েন নাইঃ গান্ধি, সক্রেটিস, কিয়েরকেগার্ড, জর্জ বাটাই, আনাইস নিন,ফ্ল্যমেঙ্কো, ব্যালাড, লোরকা, জসিমুদ্দিন,সিলভিয়া, জাহানারা,তালের রস,দোচুয়ানি, তিন চুয়ানি, আজম খান,শেফালি ঘোশ, শ্যাম সুন্দর... সবকিছুকেই আমি এক সুতোয় পেয়ে যাই। আমার শহরের রাস্তায় আমার সময়ের ডাইনোসরদের জখমে ভরা জিবাস্মের দিকে আমি অত্যন্ত মন খারাপ চোখে তাকিয়ে থাকি...।

চয়ন খায়রুল হাবিব

লন্ডন সেপ্টেম্বার/২০০৮