Tuesday 22 December 2020

মঞ্চনাটকের দায়মুক্তি ২ : ইব্রাহিম আলকাজি, আগুস্তো বোয়াল পেরিয়ে

রক্তবীজ, ওলে সোয়িঙ্কার স্ট্রং ব্রিড নাটকের অনুবাদ, ১৯৯০

১৯৯০ সালে আমার অনুদিত আফ্রিকার নোবেল জয়ী নাট্যকার ওলে সোয়িঙ্কার স্ট্রংব্রিড নাটকের অনুবাদ রক্তবীজের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ উপলক্ষ্যে যে বিস্তারিত ভূমিকা লিখছি, তাতে সময়খন্ডগত তুল্যমূল্যে আজকের বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকের পরিস্থিতি তুলে ধরতে ভারতের থিয়েটার গুরু ইব্রাহিম আলকাজি ও ব্রাজিলের নিরিক্ষা ধর্মি থিয়েটার অনুশীলক আগুস্তো বোয়ালকে নিয়ে আলোচনা করেছি।সে আলোচনা এখানে তুলে দিলাম।

৯০ দশকের পর বাংলাদেশের থিয়েটারের অন্তর্মুখিতা বুঝতে হলে এন, এস, ডি, ভারতীয় ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ইব্রাহিম আলকাজি এবং দূরদেশ ব্রাজিলের থিয়েটার নির্দেশক আগুস্তো বোয়ালের কাজের ধরন বোঝা দরকার।

ইব্রাহিম আলকাজি

স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে পারফর্মেন্সের তেমন কোনো একাডেমিক প্রতিষ্ঠান না থাকায় উৎসাহীরা যেতো দিল্লির এন, এস,ডি বা পুনার ফিল্ম ইন্সটিউটে।বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি ফসল হলেও  এবং এর পুরোধাদের কেউ কেউ বিভিন্ন একাডেমির নাট্যকলা বিভাগগুলোর অধ্যাপক হলেও, আশি ও নব্বই দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন, এস, ডি প্রশিক্ষিত শিক্ষকেরা অগ্রাধিকার পেতে থাকে।বিশ্বের অপরাপর গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনগুলোর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বাংলাদেশের গ্রুপ থিয়েটার প্রণোদনার প্রধান স্তম্ভ ছিলো নির্ধারিত পরিসরে পূর্বনির্ধারিত চিন্তাপদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসা।পরে এতে কাল্ট প্রবণতা যোগ হয়।এন, এস, ডি প্রশিক্ষিত শিক্ষক এবং তাদের হাতে তৈরি পারফর্মেন্স সংশ্লিষ্টদের দেখা যাবে পূর্ব নির্ধারিত, বিশেষ করে একাডেমি নির্দেশিত পাথেয়র প্রতি আনুগত্য থেকে মঞ্চের সম্ভাবনাকে সঙ্কুচিত করে ফেলতে।

সম্ভাবনার এ-সঙ্কোচনের সাথে অনানুষ্ঠানিকতার প্রতি বিরাগের সম্পর্ক  থাকতে পারে।গ্রুপ থিয়েটারসহ বাংলাদেশের অপরাপর অনানুষ্ঠানিক প্রকল্পগুলোতে মেধা গুম, অনুগত বলয় তৈরির ঝোঁক, স্বজন তোষণ এবং সর্বোপরি পারিপার্শ্বিক নৈরাজ্যের ভেতর ইব্রাহিম আলকাজির ছাত্রদের পেশাদারি নিয়মনিষ্ঠতা যে এক ধরনের সুশৃঙ্খল নোঙ্গর তৈরি করেছিল, তা বলা যায়।ষাটের ও সত্তরের দশকে এ-ছাত্ররা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আলকাজির থিয়েটার ইক্ষন পৌছে দিতে থাকে।ভারতের প্রখ্যাত নাট্যকার, নির্দেশক, অভিনেতা  প্রয়াত গিরিশ কার্নার্ড এন, এস, ডি বলয়ের বাইরে হলেও তার নিচের বক্তব্যে আলকাজির অবদানের গভীরতা বোঝা যায়। ২০০৫সালে ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকায় তুঘলক রচয়িতা গিরিশ কার্নার্ড লেখেন, 

‘If we were to choose an individual who formed the concept of Indian theatre, it would almost certainly be Ebrahim Alkazi.

But the fact that he is the offspring of a Saudi Arabian father and a Kuwaiti mother is one of those ironies with which theatre history bristles. In the immediate post-Independence era, the need for a national theatre was a desperate obsession.’.....’আমদের যদি এমন একজনকে নির্বাচন করতে বলা হয়, যার হাতে ভারতীয় থিয়েটার ধারনা গড়ে উঠেছে, নিশ্চিতভাবে সে ব্যক্তি ইব্রাহিম আল কাজি।….থিয়েটার ইতিহাসের বিড়ম্বনাটি হচ্ছে তার বাবা হচ্ছেন সৌদি এরাবিয়ান এবং মা হচ্ছেন কুয়েতি।স্বাধীনতার পর পর, জাতীয় থিয়েটারের প্রয়োজনীয়তা একটা মরিয়া ঘোর তৈরি করেছিল।’

ইব্রাহিম আলকাজিকে বুঝতে তার ব্যাক্তিত্বের সাথে হিন্দি আধুনিক সাহিত্যর পথ প্রদর্শক রাহুল সাংকৃত্যায়নের যাত্রাপথের দুরান্বয়ী ভিন্নতা ও পারস্পরিকতা অনুধাবন আবশ্যক।রাহুল সাংকৃত্যায়ন একের পর এক তত্বের আনুষ্ঠানিক অনুশীলনে নিবিড়ভাবে অংশ গ্রহণের পর তার শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে এসে ব্যক্তিক অস্তিত্ববোধের উদ্বোধন ঘটিয়েছে।ভলগা থেকে গঙ্গা  যাত্রা পথে রাহুল বহিষ্কৃত হয়েছে স্টালিন আমলের মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পদ থেকে, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি থেকে।বানিজ্যবসতে আলকাজির বাবা সৌদি এরাবিয়া থেকে ভারতে এসে বসবাস শুরু করেছিলেন, মা ছিলেন কুয়েতের, ছেলের প্রজন্মে এসে লক্ষ্মী ও সরস্বতীর মেলবন্ধন ঘটেছে।

আলকাজি টেক্সট নিয়েছেন সারা বিশ্ব থেকে, তার পর তাকে বেধেছেন কারিগরি শৃঙ্খলা ও ভারতীয় নন্দনশাস্ত্রের মাপে।৭০ বছর বয়সে রাহুলের মৃত্যু হয় ১৯৬৩ সালে।ঠিক এক বছর আগে ১৯৬২ সালে ৩৭ বছরের ইব্রাহিম আল কাজি দিল্লিতে জাতিয় ড্রামা স্কুলের প্রথম পরিচালকের পদ নেন।রাহুল এবং ইব্রাহিম দুজনেই তাদের কাজকে ভারতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করেছেন।রাহুলের বেলাতে এ-উপস্থাপনার মূল প্রণোদনা ছিলো বহিরাঙ্গিক অনাড়ম্বড়তা, যেখানে কারিগরি শৃঙ্খলায় অনুরক্ত ইব্রাহিম তার মঞ্চকে করে তুলেছেন ডিজাইনের ভারবাহী চলক।বিজয় মেহেতা, ওম শিভপুরি, হারপাল তিওয়ানা, নিনা তিওয়ানা, ওম পুরি, নাসিরুদ্দিন শাহের মতো শক্তিশালী অভিনেতারা যখন আলকাজির নির্দেশনাতে কাজ করেছে, তখন তার কারিগরি শৃঙ্খলা তাদের আড়াল করতে পারে নাই।কিন্তু একই ঘরানার অনেক কাজে মেধাবী অভিনয়ের অভাবে কারিগরি ভার উচ্চকিত হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশে মঞ্চ অনুরাগীদের ভেতর একটা অনুযোগ শোনা যায় যে আলকাজির নির্দেশক ছাত্র ছাত্রীরা অভিনয়ের প্রতি যত্নবান নয়।এমন হতে পারে যে ভালো অভিনেতা না পেতে পেতে অভিনয় সৌকর্শের গুরুত্ব এদের কাছে কমে গেছে।আর যে পরিমাণ সাধনা বা রেওয়াজে একজন শিল্পী গড়ে ওঠে, সে অঙ্গিকারও আজকের বাংলাদেশি মঞ্চ কর্মির ভেতরে নেই।ফলে একটি প্রযোজনা ইভেন্টসের মাত্রা ছাড়াতে পারছে না, আর টেক্সটের গুরুত্ব আপোষ করা হচ্ছে কারিগরি ইম্প্রোভাইজেশানে।

বাংলাদেশের টেলি মিডিয়া, চলচ্চিত্রের সবলতার পুরোটুকুই এসেছে গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনে আহরিত দক্ষতা থেকে।এ দক্ষতাটুকু সরিয়ে নিলে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প ভালো বুনিয়াদ থাকা স্বত্বেও এখন আর পেটে ভাতের শিল্পের বেশি কিছু নয়।মঞ্চকর্মিরা পেশাদারিভাবে কিছু না পেয়ে মঞ্চের ব্যাপারে আর আগের অঙ্গীকারের জায়গাটুকুতে নেই।ফলে মঞ্চে যেরকম ভালো কাজ নাই, দর্শক সমাগমও কম।মঞ্চ থেকে যে দক্ষতাটুকু কর্মিরা অর্জন করেছে, অনেকেই তা আর পোর্টফলিওতে বলছে না।আমাদের গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনের শক্তিশালী শেকড়ের পরও এটা হয়েছে প্রবর্তনাগত আপোষের কারণে।ধরা যাক মার্লোন ব্রান্ডো, লিজ টেলরদের কথা, তাদের পোর্টফোলিওতে প্রথমেই চলে আসবে মঞ্চ নাটকের কথা।শুধু ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য যে ভাগাভাগির খ্যাপ তাতে মঞ্চ, চলচ্চিত্র কোনো কিছুর নান্দনিক সৌকর্ষ বাড়ার কথা নয়, বাড়ছেও না।কিন্তু ক্ষুন্নিবৃত্তি ও সংসার পালন জরুরি ব্যাপার।এখানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশ্বায়নের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অন্তর্মুখিতায় NGOর ভূমিকা দেখা যেতে পারে।

আগুস্তো বোয়াল

মঞ্চে সাংস্কৃতিক অন্তর্মুখিতা এবং NGOর সম্পর্ক  আলোচনায় ব্রাজিলের খ্যাতনামা মঞ্চ অনুশীলক আগুস্তো বোয়ালের কাজের ধারা প্রাসঙ্গিক হতে পারে।বোয়াল এক সময় সঠিকভাবে শিল্প সমৃদ্ধ পশ্চিমে অনুভূতির অন্তর্মুখিতাকে চিহ্নিত করেছিল।বোয়াল যে এককভাবে এখানে এসেছিল তা নয়।ব্রিটিশ চার্লি চ্যাপলিন, জার্মান বের্টোল্ড ব্রেশট, আইরিশ বেকেট চলচ্চিত্রে ও মঞ্চে অনুভূতির অন্তর্মুখিতাকে চিহ্নিত করে তা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিল।১৯৩১ সালে নিউইয়র্কে শেরিল ক্রফোর্ড, লি স্ট্রাসবুর্গরা যে গ্রুপ থিয়েটার  আন্দোলন শুরু করেছিল তার মুলেও ছিলো উপস্থাপনাতে অনুভূতির অন্তর্মুখিতা থেকে বেরিয়ে আসা, যার ফলশ্রুতিতে গ্রুপ থিয়েটার মঞ্চে আনে টেনেসি উইলিয়ামসের স্ট্রিটকার নেমড থিয়েটার, দেখার পঞ্চাশ বছর পর যার রিভিউতে আর্থার মিলার লিখছে, এখনো মঞ্চে মার্লোন ব্রান্ডোর নিশ্বাসের শব্দ সে শুনতে পাচ্ছে য্যানো একটা ক্ষুধার্ত বাঘ মঞ্চ দাবড়ে বেড়াচ্ছে।মিলারের এ বয়ান থেকে অভিনয়ের গুরুত্ব বোঝা যাচ্ছে, যা ওর স্ত্রী মেরিলিন মনরোকেও প্রভাবিত করেছিল।

বোয়াল তার থিয়েটার প্রবর্তনায় যোগ করেছিল র‍্যাডিকাল লেফট বা উগ্র বাম মাত্রা এবং এক পর্যায়ে আস্বস্ত হন যে NGO কাঠামোতে এ মাত্রাকে উপস্থাপন করা যেতে পারে।এক পর্যায়ে বোয়ালের থিয়েটার কর্মকাণ্ড এবং NGO কাঠামোতে কোনো পার্থক্য থাকে নাই।বোয়াল একবার রিও ডে জেনিরোর পৌরসভা সদস্য হয়েছিল এবং সে মেয়াদেও লেজিসলেটিভ থিয়েটার নামে একটি শিক্ষামূলক NGO গঠন করে।বোয়ালের ভাষ্যে এ জায়গাতে আসার পেছনে তার শ্রেণীগত অপরাধমনস্কতা কাজ করেছে।রিওর বিভিন্ন বস্তিতে কাজ করবার সময় বোয়াল আবিষ্কার করে যে হিংস্রতার অভিনয় করবার সময় তার সহযোগীরা নিজেদের সংস্কার কাটিয়ে উঠতে পারছে না।বস্তিতে কাজ করবার সময় বোয়াল দ্বান্দিক রাজনৈতিক অবস্থান থেকে আসা থিয়েটারের সীমাবদ্ধতাও উপলব্ধি করে, দেখতে পায় যে শ্বেতাঙ্গ এবং সচ্ছল পরিবারের সন্তান হিশেবে সে আপনাআপনি বস্তিতে তার দর্শকদের থেকে ওপরের বা ভিন্ন অবস্থানে আছে।এসব সীমাবদ্ধতার উত্তরে বা নিষ্পত্তিতে বোয়াল তার শিক্ষামূলক NGO থিয়েটার গঠন করে, যাকে তার যায়গা থেকে প্রতিনিধিত্বমূলকও বোঝা যেতে পারে।বোয়ালের উপলব্ধিজাত সীমাবদ্ধতা, অপরাধমনস্কতা যেভাবেই আমরা দেখি না কেনো, এসবের মিশেল নিষ্পত্তিতে সে একটি পূর্ব নির্ধারিত উপস্থাপনা কৌশলে চলে যাচ্ছে, যেখানে অভিনেতাকে সে কৌশলটিকে সন্তুষ্ট করতে হবে।

বস্তিবাসীদের সহজাত উচ্চকিত অভিব্যক্তি থেকে বোয়াল নিজের যে সীমাবদ্ধতা আবিষ্কার করেছিল, পূর্ব নির্ধারিত কৌশলে সেখান থেকে মুক্তি কিভাবে আসতে পারে, তা নিয়ে আমি আস্বস্ত নই।কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন বিপণন সংস্থা বোয়ালের এই কাঠামোতে আস্বস্ত হয়ে ওঠে এবং বুঝতে পারে যে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেবা পণ্যের প্রচার, সম্প্রসারে এ কাঠামোটি সহায়ক এবং উপযোগী।একই জায়গা থেকে দেখা যাবে বাংলাদেশে বিপণন, থিয়েটার ও NGO কাঠামোর একটি পারস্পরিক জোট তৈরি হয়েছে, যা থেকে প্রশ্ন উঠতে পারে বোয়াল বস্তিবাসীদের সহজাত উচ্চকিত অভিব্যক্তিকে খুলে দিতে চাইছিলো না কি পোষ মানাতে চাইছিলো।আমি ব্রাজিলে যাই নাই, বোয়ালের লেখা পড়েছি, কিন্তু কাজ দেখি নাই।আবার আমি বাংলাদেশের বস্তিতে বছরের পর বছর আষ্টেপৃষ্ঠে কাটিয়েছি কোনো শ্রেণীগত অপরাধমনস্কতা ছাড়া, বস্তিবাসীদের কাছে আমাকে শিক্ষক বা সেবা পণ্যের সম্প্রচারক হতে হবে, এটা আমার মনে আসে নাই।কিন্তু ৯০ দশকে যখন অনেক নিবেদিত থিয়েটার কর্মি NGO কাঠামো ও বিপণন সংস্থার ভারসাম্যকে জীবিকা নির্বাহের পথ হিশেবে নিলো, তারাকিন্তু অনুভূতির বহির্মুখিনতাকেই পেছনে ফেলে গেলো। 

ভরত মুনি তার নাট্যশাস্ত্রের হাজারে হাজারে কাব্যিক শ্লোক দিয়ে যে অভিনয়, সঙ্গীত, নাচের যে অলঙ্কারিকতা তুলে ধরেছিল, অর্চনার দিকটি বাদ দিলে তা থেকে খুটে খুটে বার বার অবগাহনের ব্যাপার হচ্ছে দেহছন্দের দুর্ঘটনা, মানুষের জান্তবতার নান্দনিক উপস্থাপনা।ব্রেশট  যে এলিয়েনেশান কারসাজি দিয়ে দৈনন্দিন পরিচিত ঘটনাকে অদ্ভুত করে তুলেছে, পিটার ব্রুক যাকে মঞ্চের শূন্যস্থান বলেছে, আমার কাছে মনে হয়েছে সে এলিয়েনেশান এবং  শূন্যস্থান ভরাট হয় দুর্ঘটনা বা মিসহ্যাপে, অভিনেতার আচমকা আবিষ্কারে, সুফি ঝিকিরের আচ্ছন্নতায়।রাহুল সাংকৃত্যায়ন সে দুর্ঘটনার অন্তসারে পৌছে তত্বকথা থেকে সরে গিয়েছিলেন।যাত্রাপথের আনন্দটাকে তার আরো বেশি জরুরী মনে হয়েছিল।রাহুল আরাধ্য সে দুর্ঘটনাটি সরবরাহ করে নাট্যকার, দুর্ঘটনাটিকে আত্মস্থ করে দর্শকের কাছে পৌছে দেয় অভিনেতা।ইব্রাহিম আলকাজি, আগুস্তো বোয়াল থিয়েটারে নমস্য, কিন্তু অনেক সময় নমস্য প্রতিমাকে পূজারি অর্চনার শৃঙ্খলায় বেধে ছোট করে ফেলে।এটা যত না ঘটে প্রতিমাদের মিথের কারণে, তার চেয়েও বেশি ঘটে পূজারীদের দুর্ঘটনা এড়াবার আশঙ্কা থেকে।


চয়ন খায়রুল হাবি

২২/১২/২০

ব্রিটানি, ফ্রান্স

ব্রেশট বনাম সার্ত্রে : মঞ্চনাটকের দায়মুক্তি ১  

ওলে সোয়িঙ্কা : রক্তবীজ নাটকের দ্বিতীয় সংস্করণ