।১। ঘাতকেরা এবং Banality of Evil :
শুনতে শুনতে অন্য বাসার শব্দকে
নিজের বাসার শব্দ মনে হয়ঃ কানের পর্দা টপকে
জন্মের উচ্ছাস মৃত্যুর হাহুতাশ ঝরা-পাতা ছেড়া-খাতার
সাথে অন্যের উঠানের আলো ছায়া মায়া কুহেলিকাও নিজের মনে হয়
ভিতরের ভয় কি প্রথমেই নিজের বসতকে
অন্যের খত মনে করায়ে উচু হারে জিবনের সুদ দিতে দিতে
তত্বের বুদবুদে উড়ায়ে নিতে চেয়েছিল ব্যাক্তির নিরাপত্তা
শামসুর রাহমানের উপর আগ্রাসন হুমায়ুন আজাদের হত্যা
এমন কি যে বানভাষি খলিলুল্লাহ আজিম্পুর গোরস্থান
আর চাঙ্খার পুলের লাশকাটা-ঘরকে নিজের ভিটামাটি ভেবে
লাশের উচ্ছিস্ট খেয়ে শুধেছিল জন্মের পরিত্রান
না বুঝেও বুঝেছিল এসবের পেছনে আছে banality of evil
সত্তর দশকের এক একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাত ফেরিতে
আলতা মাখা খালি পায়ের হাজারো মেয়ের ভিড়ে
একজনের প্রতি হঠাত আশনাই জাগাতে স্যাঙ্গাতের কাছে জেনেছিল নামঃ
বিদ্রোহি কবি নজরুলের কন্য আমাদের সকলের খিলখিল
এরপর চাঙ্খার পুল মর্গে
ফুলে ঢোল নিস্প্রান নিস্পন্দ জিবনের অবশিষ্টেও
সে দেখতে পায় আলতা-গাড়-আবেশের পষ্ট মন্থন
রক্তের ভুভুক্ষায় দোলে বিশ্বাসির অন্ধ নিস্প্রেম সমিকরন
কিন্তু আমিতো খুনি নই
হত্যাকান্ডে নিহত লাশ আমি কক্ষনো খাবনা
যে যা বলতে চায় বলুক কিন্তু মুক্তিকে বন্ধের
সালতামামি পত্রে কক্ষনো টিপসই দেবনা
।২। ওফেলিয়া কমপ্লেক্স :
উত্তর ও দক্ষিনের মাঝখানে এক এবসার্ড মহাশিতকাল
চিনাবাদামের খোসার ভিতর পাল খাটায় পেরোলো স্বপ্ন-সুরতহাল
সেরকমই ছোট ছোট মাছ ছোট ছোট গাছ
চিতল আর চাদের জোয়ারভাটাগত গর্মিলিয়া এবং খলিলুল্লার তলাশের খিলখিল
খিলখিলের ঝাকা উপুড় করে মাছওয়ালারা দেখালো
বিয়ের সাজপোশাক পরা মাছকন্যা-গর্মিলিয়ার লেজ মুড়া পেটি
এ হাকেঃ দে রে দে আমারে সাত ভাগা গর্মিলিয়া দে
ও হাকেঃ না না সবগুলা গর্মিলিয়া খলিলুল্লার ডুলাতেই দে
মাছকন্যার পেট কাটবে মনপছন্দ মাছকন্যার সেই সহদর
ভবিষ্যতবানি বেচতে গিয়ে যে উভচর চিল্লায়েছিলঃ
কে আছে আমাদের ভিতর যে পলিটিকালি কারেক্ট
দৈবের প্লাঞ্চেট না কি পাগলের পাগল দেবদুত হ্যামলেট
খিলখিল তুই আমাদের অস্ফুট ওফেলিয়ারে আয় আয় বের হয়ে আয়
খলিল ভাইর বটিতে গলাটা পেতে দে
কানসা উল্টায়ে দেখাই তুই এখনো কিরকম তাজা
বরফের কুচি মাখা তবুও কেমন গা ছম ছম গরম গরম
স্যারের বৌরা কিন্তু বুঝেছে ভালো
আজকের রাত থেকে খাটিয়াতে তিন জন
গর্মিলিয়ার আজ্ঞায় খিলখিলিয়ার ইচ্ছামত সহিংশ আগ্রাসন
মুগের ডালের সাথে লাউঘন্টের ভিয়াগ্রায়
বাইরে পাহারা দেবে ঘোর লাঘা বেঘোর পুই জুই উই
বরব্বোইতে উইপোকাদের ঢিবিগুলা আসলে বাপের বাড়ি থেকে উড়াল
ওফেলিয়ার পোষা কবুতরদের বানপ্রস্থ কবর
মুর্দাফরাসি বসতের সনতরাশে কবরখোদকেরা খিক খিক খিক
গারোপাহাড়ের আচিক-ইউক্যালিপ্টাস ফুলেরা ইউক্যালিপ্টাস গাছতলে
চলেশ রিচিলের সমাধিতে উইঢিবিগুলাকে ফিশফিশাতে শুনে...
মাছওয়ালা মাছওয়ালিদের আশ-শ্যওলা-উদবিড়ালি-আদিবাস-মন্থনে
মাছের সওয়ার হ্যামলেট রাজকুমার কাশছে শেক্সপিয়ারের অতিরঞ্জনে
তবে তাই হোকঃ অশোক বদলে যাক উল্লাস পিরের উচ্ছাসে
কাফনের কাপড় ছাটা ব্রেসিয়ার বোরখা পরায়ে আড়ং-জবড়জঙ্গে নাচাও পাগল কথ্যক
'গুড মুসলিম' বলে হারানো সাম্রাজ্য গেলাতে চাইলো খবিশ ব্রিটিশ
ব্যাড মুসলিমেরা উগরে দিলো খলিলুল্লা নামে এক লাশখেকো বিকট সহিশ
।৩। বাবুস্কার পুতুলা :
কোন সহিশ চাবকালো পাছায় আটা পিয়ানোপত্র তাতে খিলখিলের খুব আসে যায়
পাছারও এবং পিয়ানোরও কারন আহসান মঞ্জিলের নিখোজ বাইজি-পিয়ানোটা
ইটভাটা পোড়া বুড়িগঙ্গার স্বপ্নছুট জলে ভেসে যেতে যেতে ক্রমশ যুক্তিহিন হঠাত জমাট
প্যারিস নিউইয়র্ক দিল্লি বেইজিং কোলকাতায় ঢাকায় গর্মিলিয়ার মিনিয়েচার ত্রস্তে জড়সড়
রাশিয়ান কাঠের পুতুলা বড় বাবুস্কাদের ভিতর অনেক অনেক ছোট
ছোটর উপরে পরতে পরতে অনেক অনেক বড়
কোরক না খুলতেই আনারকলি জিন্দা কবরস্থ
পিতৃতন্ত্রের চাদমারিতে চারাকলমগুলো শালিমারে মহাভুতগ্রস্থ
এই জড়সড় একের ভিতর আরেক ছোটবড় সহমিল-সমবায়ের বাইরে
যে প্রবল শয়তানি তাকেই বলা যায় বানিয়াটোলার অন্তর্ঘাতি রাহাজানিঃ
বাঙ্গালনামার যজমানি সকলেই কুরেশ সৈয়দ পাটোয়ারি ভট্ট গাঙ্গুলি চৌধুরি
রুনি সাগরের জানাজাতে খেলাও শেয়ার বাজা্রি পদ ও সম্পদের দিকদারি
ছোট ছোট প্রতিকের ভিতর বড় বড় সাম্প্রতিক :
রামুর পুড়ে ছাই বৌদ্ধ্বমন্দিরে সময় বাকাতে থাকে সময়ের সুড়ংগপথে
ইমামবাড়ার শিয়া বালকেরা তৈরি ফজর ওয়াক্তে
খোলা তরবারিতে নৈর্ব্যাক্তিকতা ভারি হবে মহররমের মহাতাজা রক্তে
এভাবেই কোন এক অজানির চাদনিতে প্রমাদবন্দি নাবালক খলিল
চাঙ্খার পুলের লাশকাটা ঘরে নজরুল কন্যা খিলখিলকে দেখে
পরিনত হয় সাবালক-লাশখোর খলিলুল্লায় এবং বুঝে নিতে চায়
জাতিয় ইত্যকার কবি কাঠাল দোয়েল শাপলার লিল্লাহঃ
বুঝে নিতে চায় কখন কাঠপোড়া হাড় বদলায় কাঠগোলাপের ফসিলে
মাল মাথায় ওঠা নুনুতে তড়পানো বোবাদন্ডের রংধনু উজড়ায়ে
সোনালি পাট পাট চাপাট চাপাট ডাকিনের ডাকে সুন্দরবনের সুন্দরি গাছ লোপাট
বয়রামন বানাতে থাকে একের পর এক ফসিলজাত জাতিয় কবরের আসবাবপত্র
।৪। কাঠের কারিগর :
ভাগছত্রের ছদ্ম দাবিদার আশির দশকের ব্রিটিশের রাজকবি টেড হিউজ
সুন্দুরবনে তাকে রাজকিও বাঘের ভোজ খাওয়ালো স্বৈরতন্ত্রি ঘোগের দঙ্গল
সিকি শতক পরে আবারো গোক্ষুরের হিস হিস নির্বিষ ঢোড়ার ছদ্মবেশে
উচ্চবিত্য তার তঞ্চকতা লুকায় 'হে উতসবের' প্রবঞ্চক অনুবাদক লেখক সন্নিবেশে
তাহলে বাংগালি কে বাংলাই বা কোথায়
প্রিতিলতা সিলভিয়ার শহিদি সতরঞ্চ কল্পনা চাকমাতে আকে বাংলার গায়েবানা মঞ্চ
কিন্তু খলিল সিরিয়াস সে লাশখেকো তার মনভর্তি এক অনাবিল গর্মিলিয়া
সে ভাসা শিখে নাই সে বয়রা এবং তার মুর্শিদও এক বয়রা কাঠের কারিগর
বড় কবরের ভিতর করাত-মাছের দাত কাটা ছোট ছোট অনেকে কবর
ছোট কবরের উপর পরতে পরতে অনেক বড় বড় করাত-মাছের কবর
ঘুলঘুলি চোয়া আধিয়ারি আশ্বিনের আলোতে নারকেলের ছোবড়া পোড়ানো ধোয়া
এবং অন্তরমিলের মোয়া চাবানো ঝাঝালো টেকনাফে আঠালো চিলকায়
মাছ গোস্ত সবজিতে সেকো-বিষ মাখাতে মাখাতে চিবুক চুলকায়
মরনের বাজিকর আমাদের খিলখিলের ঘরজামাই কিম্বা এক ভবঘুরে কসাই
উত্তেজনায় নিবসিত মন যার একাত্তরের ৬ বছুরে স্মৃতিহিন ভিটাছাড়া
২০১২তে বাদের বাদ বরবাদ বেতমিজ ধন খিলখিলের মুন্ডুকাটা ধড় দেখে উচাটন
মুন্ডুকাটা মানেইতো চাকা চাকা হরতন রুইতন ইস্কাপনি বর্গক্ষেত্র
বয়রা কারিগর ভালবাসে বাটালি রানদা ছোয়া চন্দনগন্ধি আসবাবপত্র
বয়রার পক্ষ্যে গান শোনা সম্ভব নয় তাই সে আসবাবপত্রে সুশিল চর্জাপদ লিখে
নিরক্ষর খলিলুল্লাহও একইভাবে মনে মমে রামপ্রসাদি ভজন রচনায় সম্বিতহারা
রাহুগ্রাসে উদ্বাহু খাটো লুঙ্গিতে ঢাকা সাড়ে ছয় ফুটি দশাসই খলিলুল্লা
খালি পা খালি গা সা রে গা মা পা ধা নি স্বরলিপির জবানিতে জেনেছিল
পিলখানা থেকে আশুলিয়াতে জিবাত্মার দহন এবং এন্টি বায়োটিকের দরকারি নন্দন
প্রানে চোট পেলেই গান লিখতো সিলেটের রাজা হাসন
দুক্ষ বেড়ে গেলে হাসন ওড়াতো হাজার হাজার সত্যিকার বুলবুলি
বয়রার আসবাবপত্রে পোড়ে নিশাগন্ধি গুলে বাকোয়ালি
খেয়াল করুণ যে বৃটিশ-বাঙ্গালি কেতকি কুশারি ডাইসনেরা
মাইকেলের শ্রমজিবি স্বেতাঙ্গিনি ঘরনিদের বলে '' জাতপাতগোত্রবিহিন''
।৫। উল্লাস পিরের জন্মসুত্র :
কেতকিদের স্নবারির আড়ালেই সাল তামামির নিকাশ ঢাকেশ্বরির চাদোয়ায়
একুশে ফেব্রুয়ারির হিস্যার পুরাটাই কি অনাদায়
আদায়ের জাবেদা খাতায় অরুন বরুন কিরনপত্রের
তিনভাগের একভাগ জোনাকি একভাগ বেদে এবং একভাগ দেবংশি
বেদেদের মিত্র যে কোন নদি জোনাকিদের মিত্র অন্ধকার
দেবংশিদের মিত্র পাহাড় ধ্বংশ হলে পাথরও ভঙ্গুর হয়
দেবংশিদের শত্রু হচ্ছে মানুশ আর মহা শত্রু হ'লো দমকল বাহিনি
দমকল বাহিনির কথা কাহিনি কিছুদেই দেবংশিদের কথা কাহিনি নয়
অগ্নিপুজারি দেবংশিদের অগ্নি-নির্বাপক তত্ত্ব ধর্ম অধ্যাত্ম কোনটারই দরকার নাই
কম্পাসেরও দরকার নাই দেবংশিরা হাটে ঘুমের ভিতর
কিন্তু সেই হাটার সাথে সপ্ন বা দুসপ্নের কোন সম্পর্ক নাই
যে কোন উড়নের শুরুতেই আমাদের অডানা ইউটিউব নিষেধাজ্ঞ্বায় ভিজে যায়
একেকটি বেদে-প্রান একই সাথে উড়নচন্ড এবং মাননিয় মরু-মনশায় সুস্থিরঃ
এখান থেকেই লাশখেকো খলিলের অভ্রান্ত গুরু
নিখুত নিখাদ বয়রামন উল্লাস পিরের শুরুঃ দেয়া-ঝিকিরের মজমায়
নিজেদের-দেহের ঘরবাড়ির ঊঠানের রাস্তা-ঘাটের ছায়া উপড়ায় ফেলুন
নিজেদেরকে নিজেদের বাসস্থান কাজের জায়গাতে ছায়া থেকে আলাদা করুন
দমকল বাহিনি ছায়াদের সুত্র ধরেই আগুন নেভায়
চিরস্থায়ি আগুনের বন্দবোস্ত করুন।কাপড় চোপড় খুলে ফেলুন
কাপড় চোপড়ে ঢাকা...তার মানে আপনি নিজেই আসলে ছায়া...
কেউ যদি দাবি করে যে তার কাছে ছায়াদের ছবি আছে সেটা আসলে অপছায়াছবি
সবচেয়ে পুরান প্রানের নাম দেবংশি জোনাকি আর বেদেরা হ'লো অবতার
ছোট ছায়ার উপর পরতে পরতে বড় বড় ছায়া...বড় বড় আগুনের ফুলকি
বনমানুষ পরি অশরিরির মিশালঃ খলিলুল্লা নরের ভিতর খিলখিলের নারিকঙ্কাল
টুথপেস্টের ফ্যানাসহ ফিক ফিকিয়ে হাসলো চিত্র বিচিত্র চাঁদ ও চিতলের ট্রাফিক
গতি মহাস্লথঃ শব্দগুলা সম্ভ্রম ও সংগ্রামে মোড়ানো একই সাথে জিবাত্মার তুলি ও কালাম
শিশু ও ধর্শিতের লাশ বাদ দিয়ে কোকিলখেকো নজরুলের মিস্টিমাংসে
তৈরি হয় খিলখিল ও খলিলুল্লার নরমাংসভোজি সাচার সমাচার
Choyon Khairul Habib
2012-
Brittany/France
প্রকাশিত তৃতিয় কবিতা সংগ্রহ ডৌল : জুলেখার জেরা পর্ব গ্রন্থভুক্ত প্রথম কবিতা, ২০১৫।