Monday 5 August 2013

গরিলাপতির আদালত অবমাননা : ষোড়শ সংশোধনি বাতিলের আলোকে

সংবিধান (ষোড়শ সংশোধনী) আইন ২০১৪ বাহাত্তরের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদকে ফিরিয়ে দেয়া




সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত এবং বাতিলকৃত ২০১৭
প্রবর্তনা

'গরিলাপতির আদালত অবমাননা'(৫/৮/১৩), সাংকেতিক উপকথাটি লিখেছিলাম ষোড়শ সংশোধনির আগে, পাহাড়ি আদিবাসি জনগোষ্ঠির উপর বাংলাদেশিদের প্রাতিষ্ঠানিক অত্যাচার, অনাচারের প্রতিক্রিয়ায়।এক জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিত্বমুলক অধিকার খর্ব করলে যে তার ধারাবাহিকতায় নিজেদের জনপ্রতিনিধিত্বমুলক প্রতিষ্ঠানের প্রায়োগিকতাও হ্রাস পেতে থাকে তার স্যাটায়ারধর্মি আলোকপাতই ছিলো উপকথাটির লক্ষ্য।বহুবছর আগে, পাহাড়ি নৃগোষ্ঠির উপর অনাচারের বাস্তবিক প্রতিকসহ এপিক সিরিজ হিসেবে প্রকাশ করেছিলাম কবিতা গ্রন্থিকা, 'চাকমা চিত্র', যা পরে গ্রন্থবদ্ধ হয় 'জুলেখা সিরাপ' সংগ্রহে।

বাস্তবিক প্রতিকে বলি, আর সাংকেতিক স্যাটায়ারে বলি, বাংলাদেশের প্রায় পুরো জনগোষ্ঠি যাদের কাছে প্রতিনিধিত্ব ও অধিকার প্রতিষ্ঠার মুখাপেক্ষি, তাদের হাতেই শৃঙ্খলিত।আদালতের অবমাননা, সংসদের অবমাননা, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনির অবমাননা, ধর্মিও অনুভুতির অবমাননা ইত্যাদি উসিলাতে আইনরক্ষাকারি বাহিনি যে পরিমানে  মজলুমের উপর জুলুমবাজি চালায়, অথচ যেই মজলুম জনগনের অর্থায়নে এই সংসদ, আদালত, সেনাবাহিনি, ধর্মিয় মোল্লাবাহিনি চলে সেই জনতার অবমাননার এরা কোন প্রতিকার করে না।

লক্ষ্যনিয়, যে-সুপ্রিমকোর্ট নিজেকে জনপ্রতিনিধিদের কাছে জবাবদিহিতার বাইরে নিতে ষোড়ষ সংশোধনি বাতিল করে; সেই একই সুপ্রিমকোর্ট র‍্যাব গঠন অধ্যাদেশগুলো বাতিলের কোন আয়োজন করে না; একই সুপ্রিমকোর্ট কল্পনা চাকমাসহ আরো সব বিচার বহির্ভুত হত্যা, গুম, অপহরনকে জবাবদিহিতার আওতায় আনবার কোন আয়োজন করে না।ষোড়শ সংশোধনি বাতিল করে সুপ্রিমকোর্ট বাংলাদেশের জনগনের প্রতিনিধিত্বমুলক গনতান্ত্রিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতার শেকড়ে আঘাত করলো।

আবার যে জনপ্রতিনিধিরা সুপ্রিমকোর্টের বিচারকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবার কথা, তাদের এবং তদিয় দলগুলোর মগের মুল্লুকি কির্তিকলাপও যে প্রতিনিধিত্বমুলক গনতন্ত্রকে বিঘ্নিত করেছে, দুর্বল করে দিয়েছে তাও লেখা বাহুল্য।যোড়শ সংশোধনি বাতিলের রায় প্রকারান্তরে আমাদের ভোটের অধিকারের বিনিময়ে প্রশ্ন তোলার 
অধিকারকে খর্ব করে এবং অনির্বাচিত স্বৈরতন্ত্রের পথকে প্রশস্ত করে।চখাহা.১৯/০৮/২০১৭ 

গরিলাপতির আদালত অবমাননা

আমাদের গরিলাপতি গড়ায় গরমকালের পাহাড়ি ছড়ায়

পাড় ধরে পোলাপান আর তাদের গলাকাটা মা বাপ চিল্লায়
ভাত খায়া যান ভাত খায়া যান
তার বাদে যত খুশি কাইতচিত নেংটা বেশে ছড়াতে গড়ান

ছাপড়া-রেস্তোরার ছাউনিতলে বসা ছিলো গরিলাপতি রেস্তোরামালিক
রোদঝিলিকে সিদ্ধ্ব হচ্ছিলো সস্তার আতপ
কি থেকে কি হলো ঘামতেলালো বাবরি হঠাত বেতাল
লাকড়ি জ্বলা মাটির চুলাও ভেসে গেলো পাহাড়ি বানে
ভেসে গে্লো ভুট্টাক্ষেত ব্যাঙ্গের ছাতা সাতকরা অঢ়হড়সহ
জানা অজানা ইত্যকার ভেষজ বনজ গেরস্থালির নিমিত্ত সরঞ্জাম

এবড়ো থেবড়ো গরম পাথরে পাছা রেখে স্পঞ্জের চপ্পলসহ
থাবা নখ পানিতে চুবাতেই বাদবাকি
লোমশ শরিরে তির তির এক বেগুনরঙ্গা অধির ঘাসফড়িং

ফড়িঙ্গের চোখে সানগ্লাসঃ
আর তাতে গরিলাপতির সমস্ত লোমই মখমলি মৈথুনে নরম নরম
দেহভর্তি কনভেক্স কনকেভে ফড়িং তার লিংগ নিমেষে বদলায়
ফড়িঙ্গির কস্তুরিসম মর্মভাষায়

কালো আলখাল্লাধারি মোবাইল মেজিস্ট্রেট ছড়াতে নেংটা গড়াগড়ির অপরাধে
গরিলাপতিকে ফাসালো ফৌজদারি মামলায়
ফড়িংগি ফেরার
গরিলাপতিকে আনা হলো হাইকোর্টে

সেখানে আরো আরো আলখাল্লাধারিকে দেখে
ফড়িঙ্গির বেদনাভার গরিলাপতি বেজায় উত্যপ্ত
আলখাল্লাধারিদের সে মনে করলো বোরখাধারি নারি
ফড়িঙ্গি-বিরহ-কাতর-মাথায়-মাল-ওঠা-গরিলাপতি
কামজ্বরে মত্ত হয়ে এক বিচারপতিকে প্রকাশ্যে সংগমালো

ভুল বুঝতে পেরে যার পর নাই বিব্রত গরিলাপতি
সভ্যতার কাছে আত্মসমর্পন করলো
এবং আদালত অবমাননার দায়ে মৃত্যদন্ড পেলো
দন্ড কার্জকরের সময় ঘাড় মটকাবার আগে
সে আবার ফড়িঙ্গিকে তার ভাঙ্গাচোরা দেহের চারপাশে উড়তে দেখলো

ফাসিকাঠে উড়ে উড়ে ফাসদড়িতে পুড়ে পুড়ে ঘাসফড়িঙ চিল্লালোঃ
আমাদের কানাজিবন অগত্যা ভো ভো
আমাদের গরিলাপতি গড়ায় গরমকালের পাহাড়ি ছড়ায়


চয়ন খায়রুল হাবিব
৫/৮/১৩
ব্রিটানি-ফ্রান্স