Wednesday 25 April 2012

ঢালি আল মামুনের যে কোন একটা চিত্র প্রদর্শনিতে

নিম্নস্থ লেখাকে কোন প্রদর্শনির রিভিউ বিবেচনা না করাই উত্তম!

জিবিত মাইক্রোফোন।মৃত জনসাধারন।...যে কোন একটা প্রদর্শনিতে শিল্পি ঢালি আল মামুন দর্শকদের কাউকে, কাউকে
বুঝায়ে দিচ্ছিলো ক্যানভাসে সুখ ও দুক্ষ নিয়ে সে কি কি বলতে চেয়েছিলো এবং কেন প্রদর্শনিটার শিরোনাম, ''The Country Of The Rising Sadness''!অল্প দুরে স্পঞ্জের চপ্পল পরা, গ্যালারি-গুদাম-কর্তা নিসার হোসেন সাদা, কালো দাড়িতে ঢাকা তার মিস্টহাশিমাখা ক্ষোমা চুলকাচ্ছিলো।  

দুক্ষ বিমুর্ত হলেও, দুক্ষিত মানুষ মুর্ত!সেরকম সুখি মানুষের বেলায়ও!যে মানুষের ছবি আকতে পারে না, সে কিন্তু মানুষের অনুভুতির ছবিও ঠিকঠাক একে উঠতে পারে না!ক্যানভাস কত লাখ টাকাতে বিক্রি হয়; তা দিয়ে কোন দেশের কি, কোন মানুষের সুখ দুক্ষও পুরাপুরি বোঝা যায় না!সুখি মানুষ কিন্তু দুক্ষি মানুষের দুক্ষ বুঝতে পারে এবং তা একে ফেলতে পারে।সেরকমটা হলে আমরা পেয়ে যাই পিকাসোর হাতে, ''ডোরার কান্না''!দুনিয়ার সেরা সাইকো এনালিস্টদের একজন জাক লাকা'ও পিকাসোর অন্তর্গত কিউবিজমে  দোমড়ানো, মোচড়ানো ডোরা মানের মনের কোন হদিশ করতে পারে নাই।মানে পিকাসোর হাতে দমিত, ধ্বস্ত ডোরা মানষিক স্বাস্থ্যধ্বারের আশাতে বহু বছর লাকা'র থেরাপির স্মরনাপন্ন ছিলো। অবস্য ''ডোরার কান্না'' ছবিটা দেখলে আর লাকা'র বিশ্লেষনের দরকার পড়ে না।পিকাসোতো পিকাসোই।কমিশনের পুরা টাকা আদায়ের আগে মহতি পিকাসো ''গের্নিকা'' অঙ্কনের সুত্রপাত করতেও আপত্তি জানায়েছিলো।ভয়ার্ত মানুষের  ক্যানভাসে সুখ, দুক্ষ কোনটাই ঠিকঠাক ফুটে না!ফুটে গেলে তা আর তেমন বুঝায়ে দিতে হয় না; দর্শক নিজের জায়গা থেকে তা বুঝে নেয়!

বাংলাদেশিদের ছবি বিমুর্ত হওয়ার পিছনের কারন যত না সুখ, দুক্ষের অনুভুতি, তার চেয়েও বড় কারন ভিতরে গেড়ে বসা সামাজিক ভিতি!বিমুর্ততা কখনো, কখনো উন্মোচনের সহায়ক।কিন্তু অবচেতন ভিতির সাথে পরিস্থিতিজাত সামাজিক ভিতির মিশেলে বিমুর্ততা হয়ে পড়ে একরকমের আড়াল।সে-আড়াল বিভিন্ন স্তরে কখনো কথিত শুদ্ধ্বতার; কখনো দৈবের; কখনো উভয়ের আশ্রয়ে স্বস্ত হয়।লাখ, লাখ টাকা দিয়ে অনেকে এখন ফ্রেমবন্দি ভিতি কিনছে!প্রিতি কিনতে না পারলে অন্তত ভিতিতো কিনতে হয়!লাখো টাকা দিয়ে যারা ক্যনভাসে আকা ভিতি কিনতে অসমর্থ, তারা পত্র-পত্রিকা থেকে ভিতি কিনছে!ঢালি'র বন্ধু ছিলো সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, সাংবাদিক মিশুক মুনির!একই গাড়িতে ঢালিও ছিলো।আর বাসে সম্প্রতি জিবন্ত  পুড়ায়ে মারা সেই চালকের নাম?না কি টা বা টি প্রত্যয়যোগে দর্শক, শ্রোতা, পাঠক বুঝে ''চালকটা বা 'চালকটি''? ...মৃত মাইক্রোফনঃমৃত স্বরঃ মৃত বর্নব্যাঞ্জন।জিবিত ও সন্তপ্ত জনসাধারন।মাইক্রোফোনগুলা মুর্ত।আপামর জনসাধারন বিমুর্ত।আগে মাইক্রোফোনগুলা অঙ্কন সম্পন্ন হোক।মানুষ এবং তার অনুভুতি অঙ্কন কঠিন কাজ।

চয়ন
২৫/০৪/১২
ব্রিটানি