Wednesday 17 January 2018

এনফোর্সড ডিসেপিয়ারেন্স অফ যশোর রোডের গাছগুলা



একটা গা ছমছম সাস্পেন্স
'গুম' হচ্ছে জাতিসংঘের অভিধান অনু্যায়ি এনফোর্সড ডিসেপিয়ারেন্স
ব্যাক্তির যে নিখোজে থাকে আমলাতন্ত্রের বিচারবহির্ভুত হাত
গাছের বিনাশেও চলে অজ্ঞাতনামা গাছেদের গায়েবি মোনাজাত

নাটোরের রানি ভবানি সাগরদাড়ির কিশোর মধুসুদন
রুপ ও জিব গোস্বামি ফররুখ আহমেদ সুলতান
বাঘা যতিন ইলা মিত্র সুচন্দা ববিতা বিরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ
রেন্ট্রি মেহগনি ভরত-ভয়নাকে ছোয় কপোতাক্ষ চিত্রা ও বেতনা

জমিদার কালি পোদ্দারের মা যেতো চাকদহে গঙ্গাস্নানে
১৮৪২এ পুত্র রাস্তা ধরে গাছ লাগায়েছিলো মাতৃছায়াদানে
পেরেশান পাল্কির বেহারারা জিরাতো মেহগনিতলায়
১৯৭১ এ মার্কিন এলেন যশোর রোডে বাংলাদেশি শরনার্থিদের পায়

একটু আগেও বালকবালিকা ঐখানে ছিলো
একটু আগেও গাছগুলা ঐখানে ছিলো
আশেপাশে  ছায়াবিথি কয়েকটা কবিতার তিথি ভুতের গল্পের প্লট
গল্পটা আছে কবিতাটাও কিন্তু বালকবালিকা আর গাছটা উধাও

উড়ে উড়ে কোন সিথানে পুড়ে যাও জোনাকি পরান
স্থলবন্দরে বোঝাবে কাকে বংগভঙ্গে্র ট্রানজিটে যাপন হয়রান
দিনের অচেনা পোকাপোকি রাতে  মিটিমিটি জোনাকি
শামুক গুগলি খেয়ে যে বানায় রহস্যময় আলোর ঝিকিমিকি

অক্সিজেনে কেপেকেপে নাচেকুদে জোনাকিদের আগুনে নাচুনি
মহাসড়কি মায়াতে জ্বলে মহালয়া অর্থনিতির বেহায়া  চিতাবহ্নি
অকুস্থলে ফরেনসিক কিছুটা এবড়ো সময়ের থেবড়ো  বলিরেখা 
চল্টাওঠা মাইলপোস্টে সিমান্ত শেষের চিহ্ন মহাকালের ধুলিমাখা

আসলেও কি সিমান্ত এখানে শেষ
মগ্ন গাছের নিশ্বাসে মগ্নতা ভাঙ্গা গরিব কাঠুরের যাপিত অবশেষ
কোপ মারে সে নিজের কাধে ঘাড়ে গিরায় গিরায়
রক্তমাখা ঘাম ঝরে বেনাপোল পেট্রাপোলের শিরায় উপশিরায়

ওপড়ানো মেহগনিতে জড়ানো ঘুড়িটা পতাকার আদলে জ্বলছিলো
ছবিটা অনালাইনে অফলাইনে বাংলা এবং ইংরেজিতে সকলে দেখেছিল
জাতিসংঘ ধাধায় পড়েছিলো ঐ বালকবালিকার নিরুদ্দেশে
বলা হলো ওরা ঘুড়ি ও নাটাই ব্যাবহার করেছিলো আজগুবি গুপ্তচরবেশে

তারপর বলা হলো পড়াশোনা শেষে ওরা চলে গেছে বিদেশে
মেহগনিদের ভিতর জোনাকি জোনাকিদের ভিতর নাটাই ঘুড়ি
নাটাই ঘুড়ির ভিতর বালকবালিকা
যুক্তিহিনতার মিথ্যামিথ্যি রঙগুলো হয়ে উঠলো বিবর্ন ফিকা ফিকা

ঘোষনা এলো
এখানে কোনকালে কোন গাছ জোনাকি বালকবালিকা ছিলো না
ঘোষনাকারি যে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলো
সে রাস্তাটাও আর কোনোদিকে যাচ্ছিলো না

ববিতা সুচন্দাকে আকড়ে ধরে বল্লো আপা খুব ভয় লাগছে
ইলা মিত্র দেখলো একটু দুরে বাঘা যতিন নুর মোহাম্মদ সুস্মিত
সুলতান তার ফ্রেমে আকতে থাকলো প্রবল সব পেষি
মধুসুদনে সেই বালককে পেলো নাটোরের বালিকা ভবানি

এসব শুধু ভয়তাড়ানো বুঝ বা সান্তনার রুপকথা নয়
যখন আমার তোমার হাত থেকে সুন্দরের জয় কেড়ে নেয়া হয়
তখন ফেরবার পথের উপর অঝরে ঝরে গাছদের শোকগাথা
কাঠুরে বাপ তা শুনেছিলো চাইনিজ কুঠারের পাপে দারিদ্রের প্রকোপে

বালিকাটি নতুন নাটাই ধরে ঘেরেক্কা মারা শিখেছিলো
আদুরে সহদোর ভাই লাল ঘুড়ি ধরে আকাশে তাকায়েছিলো
বালিকার ফুলতোলা নিল ফ্রক বালকের কালো হাফ প্যান্ট লাল টিশার্ট
গরমকালের বিকালে দুজনেই ছিলো খালি পা এখন ওখানে আর কেউ নাই


চয়ন খায়রুল হাবিব
১৭/০১/১৮
ব্রিটানি

কভার ছবি :   রশীদ আমিন 
''এনফোর্সড ডিসেপিয়ারেন্স অফ যশোর রোডের গাছগুলা এবং অন্যান্য উপকথা সংগ্রহ''/ ২০২২।নাম কবিতা এবং প্রচ্ছদ।