Wednesday 30 November 2016

প্রহার, উচ্ছেদ, গুম : শো মাস্ট নট গো অন এন্ড অন

লাঠি, গুলি, টিয়ারগ্যাস, উচ্ছেদ, গুমের আদেশগুলো দেয়া হয় বাংলা ভাষাতে; ইংরেজি, উর্দু, হিন্দিতে নয়!সামাজিক নেটওয়ার্কে আহাজারিও করা হয় বাংলা ভাষাতে!


ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক  আবুল কালাম আজাদ  আন্দোলনের একপর্যায়ে গত রোববার, ২৭শে নভেম্বার  পুলিশের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় আহত হয়ে  পরে মারা গেছেন।....উপরের ক্যাপশানটি বাংলাদেশি পত্রিকা থেকে কাট/পেস্ট। খেয়াল করে দেখুন, এখানে বাংলা বানান কিন্তু ঠিক আছে





পিষে মারার হুঙ্কার

চাপাইনবাবগঞ্জ চোখের হাসপাতাল চত্বরে গত শুক্রবার, ২৫শে নভেম্বার দৃষ্টি শিবিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির ভাষনে চাপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলাম বলেছেন,

‘ডাকাত যদি হাতেনাতে পান, তো জলজ্যান্ত ওটাকে পিষে মেরে ফেলেন। একটা মার্ডার কেস নেব, এটা সত্য কথা এবং এক মাসের মধ্যে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে চলে আসব। গ্যারান্টি আমার। আমি যদি গ্যারান্টার হই, তবে আপনাদের কোনো ভয় আছে? যদি ডাকাত হাতেনাতে ধরতে পারেন, এলাকার লোকজনকে মাইকে ডেকে এনে ওকে পিষে মেরে ফেলেন। মাদকের গাড়ি হলে সেটি আগুনে পুড়িয়ে দেবেন। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, আপনাদের নামে কোনো মামলা হবে না। এই গ্যারান্টি আমার।’ 

উপরের অংশটুকু বাংলাদেশি পত্রিকা থেকে কাট/পেস্ট। পুলিশ সুপার মোহদয়ের উচ্চারন কিরকম জানা নাই, কিন্তু পত্রিকান্তরের উপরের কথাগুলো লেখা হয়েছে বাংলা ভাষাতে!খেয়াল করে দেখুন, এখানেও বাংলা বানান কিন্তু ঠিক আছে!অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বাংলাভাষি সাংসদ আবদুল ওদুদ।

ধরুন আমাকে, আপনাকে বিপাকে ফেলে দলবেধে পিটিয়ে মারা হলো, তারপর রটিয়ে দেয়া হলো ডাকাত বা মাদকসেবি অপবাদ!আর আমি, আপনি যদি ডাকাত বা মাদকসেবিও হই, তাহলেও দাড়াচ্ছে যে বিচারের রক্ষি অর্থাৎ পুলিশ উস্কানি দিচ্ছে নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের!এখানে কিছুকাল আগে আইনরক্ষাকারি বাহিনির হাতে আটকাবস্থায় গারো নেতা চলেশ রিসিলের মৃত্যু, চোর সন্দেহে প্রহারের ফলে শিশু রাজনের হত্যাকান্ড এবং সম্প্রতি ফুলবাড়িয়া কলেজের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের পুলিশ প্রহারে আহত হয়ে, পরে মৃত্যুকে এক রেখায় টানা হলে দেখা যাবে যে কদাকার বিচারহিনতাকে আমরা একটা সাংস্কৃতিক রুপ দিয়ে ফেলেছি!এর আগে পরে কল্পনা চাকমা, মরিয়ম মর্মু, সোহাগি তনুসহ  আরো নাম এবং ঘটনা বসিয়ে আমরা এই বিচারহিনতার সাংস্কৃতিক রেখাটিকে আরো লম্বা, চওড়া করে নিতে পারি, কিন্তু অগ্রাহ্য করতে পারি না।

আমাদের খেয়াল আছে যে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার কয়েক বছর আগে বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রিদের প্রহারের উপর আইনি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল!বিশেষ করে খেয়াল আছে, কারন তা নিয়ে আমি ফেসবুকে একটা কবিতা লিখেছিলাম  ইস্কুলের ভিতরেঃ ইস্কুলের বাইরে নামে এবং অনেকে তা নিয়ে আলোচনা করেছিল!এই সমস্ত হয়েছিল বাংলা ভাষাতে!প্রতিটা হত্যাকান্ড, নির্জাতন, গুমের ঘটনা ঘটবে, আর আমরা তা নিয়ে কবিতা, নাটক লিখবো, তাতে প্রতিক্রিয়া হয়; নান্দনিকতার বিকাশ হয় না; বরং নান্দনিকতা অবচয়ি হারে আরো অবসন্ন হতে থাকে।


গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক–কর্মচারিদের সঙ্গে সাওতালদের সংঘর্ষ 

সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু কি সংখ্যা না গুনবিচারি? 

RAB জাতিয় প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার বাইরে রাখলে, অপরাপর আইন রক্ষা বাহিনিকেও বিচারের ভার নিজের হাতে তুলে নেবার পরোক্ষ অধিকার দিয়ে দেয়া হয়!প্রহার, উচ্ছেদ, গুম সংস্কৃতির যে রেখাটি তার একদিকে থাকে কথিত জনপ্রতিনিধি, আরেক দিকে থাকে জনতা এবং মাঝখানে দেয়াল হিসেবে দাড়ায় থাকে পুলিশসহ অপরাপর আইনরক্ষাকারি বাহিনি!মুলধারার সংখ্যাগুরুর সাথে তাদের প্রতিনিধিদের যে বিরোধার্থক সম্পর্ক তার ছায়া সুদেআসলে গিয়ে বর্তায় সংখ্যালঘুদের ওপর।       
সামাজিক লেনদেনের জায়গাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং স্ববিশেষে আদিবাসিদের সাথে আমাদের সম্পর্ক আসলে কিরকম, , তাদের ভিতরেও পারস্পরিক সম্পর্কগুলোর নির্ধারক শর্তগুলো কি?হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ্ব, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃত্ব মুলধারার সম্প্রদায়গুলোর ওপর দমন, নিপিড়নে যতটা উচ্চকিত থাকে, সাওতাল বা অপরাপর মৃগয়ানির্ভব আদিবাসিদের ব্যাপারে ততটা সরব নয় কেন? বর্নবাদের ভেতরেও কি অগ্রাধিকার পায় কোন ধর্মের সাথে, কোন নৃগোষ্ঠির সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কতটা রাস্ট্রযন্ত্র জড়িত এবং সে রাষ্ট্রযন্ত্রগুলো কতটা শক্তিশালি?আর সে রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোর নৈর্ব্যাক্তিকতা, জনগনের সাথে সম্পর্ক বা সম্পর্কশুন্যতার ওপর নির্ভর করে সাম্প্রদায়িকতা সেখানে কতটুকু চিকিতস বা অচিকিতস?

ফেয়ার এন্ড লাভলি মাখা প্রিতিভাষন

আদিবাসিদের নিয়ে ফেয়ার এন্ড লাভলি মাখা নাগরিক প্রিতিভাষনগুলা পড়তে মন্দ লাগে না। পড়েশুনে মনে হয়, শত শত বছর ধরে পুরান ঢাকার ধাংগড়পট্টিসহ, অন্যান্য শহরের ধাঙ্গড়দের সাথে কমরেডদের কত দোস্তালি!সনাতন ধর্মের অসুচ, অচ্ছুত বাদ দেন, প্রগতি সরনির আনু মুহাম্মদ গং তাদের ছেলেমেয়ের ইত্যকার অনুষ্ঠানে দৈনন্দিন পয়োপরিস্কার করা ধাংগড়দের কখনো ঢুকতে দিয়েছে বলে শুনি নাই, ফটোতেও দেখি নাই!এও শুনেছিলাম, বাংলাদেশিদের ইত্যাদি শেখানো সকাল সন্ধ্যা খ্যাত মোমতাজ হোসেন তার ছেলে প্রয়াত মিঠু, চাকমা তরুনিকে বিয়ে করায় ছেলের সাথে অনেকদিন কথা বন্ধ করে দিয়েছিলেন!

চাকমা রাজপরিবারের যতই পাকিস্তান প্রিতি থাকুক ,জেনেভা ক্যাম্পের উর্দু বলা বিহারি গরিবদের যদি বাংগালি গরিবদের জায়গায় পাহাড়ে বসত গড়বার অধিকার দেয়া হয় তাদের প্রতি পাহাড়ি জনগোষ্ঠিগুলোর মনোভাব কি হবে সহজেই অনুমেয়!

আমরা যেরকম পাকিস্তানিদের হরেদরে অপছন্দ করি, সেরকম বাংলাদেশি সেনাবাহিনির দির্ঘদিনের জুলুম, নির্জাতনের ফলে চাকমারাও হরেদরে সব বাংগালিকে অপছন্দ করে!আমি বা অপর কোন বাংগালি সাহিত্যিক সমব্যাথি হয়ে তাদের প্রতিক, ঐতিহ্য খোড়াখোড়ি করে নান্দনিক কাজ করলেও তারা তা নিবে না বা নিতে পারবেনা নির্জাতিতের জটিল অহংবোধের কারনে(superiority complex of the oppressed), নির্জাতিতের প্রতিনিধিত্বের কারনে!অনেক ক্ষেত্রে বাংগালি কথায়, কাজে প্রমান করলো যে সে সমাজতন্ত্রি ও ধর্মনিরপেক্ষ, তখন হয়ত তাকে চাকমা বা অন্য কোন নির্জাতিত, শিক্ষিত আদিবাসি সমব্যাথি হিশেবে গ্রহন করলো!কিন্তু জিবনের সব ক্ষেত্রে আমরা সব কিছুর প্রমান দিতে পারি না!আর তত্বিয় প্রমান পরিক্ষায় পাশ করাতো আরো কঠিন!

অতিশ দিপংকর বা আতিশা যে ঢাকার বাসিন্দা এবং আর দশটা বাঙ্গালির মত আরেকজন বাংগালি ছিল, এটা তিব্বতিদের, বর্মিদের, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি বৌদ্ধিকদের বোঝানো গেলেও বিশ্বাস করানো কঠিন!কারন সংস্কারের গন্ডি পেরিয়ে তরুন অতিশ যে মুল্যবোধ ধারন করেছিলেন তা আজকের দিনের বাঙালি মুসলিম বা হিন্দু কি বৌদ্ধিকদের ভেতরেও দুর্লভা!

সামাজিক প্রতিনিধিত্ব অনেক সময় ব্যাক্তিকে নৈর্ব্যাক্তিক করে দেয়! সে কত বেশি এই প্রতিনিধিত্বশিল প্রতিক্রিয়ার শিকার তার ওপর নির্ভর করছে সে কতটুকু আত্মসর্বস্ব ম্যাগালোম্যানিয়াক কিম্বা কতটুকু কেন্দ্রাতিত নৈরাজ্যবাদি!হিটলার জার্মানদের বুঝিয়ে দিয়েছিল যে তারা ঐতিহাসিকভাবে নির্জাতিত এবং সে হচ্ছে জার্মানদের উদ্ধারকারি, আর ইহুদিরা হচ্ছে জার্মানদের ঐতিহাসিক শত্রু!এভাবে নেপোলিওন, স্টালিন, আতাতুর্ক, মাও, পলপট যাদের কাছে উদ্ধারকারি সেজেছে তাদের উপরেই চাপিয়ে দিয়েছে সমষ্টিক মারনযজ্ঞ!এখানে লিঙ্কনকে ব্যাতিক্রম বলা যায়, নির্জাতিত কালো দাশ শ্রমিকের উদ্ধারকারি হবার পর এবং তাদেরকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করবার পর লিঙ্কন তাদেরকে নতুন কোন মারনযজ্ঞের শিকারে রুপান্তরিত করে নাই, সে ধরনের নিতিও প্রবর্তন করে নাই, বরং প্রকারান্তরে বলেছে, শৃংখল খুলে দিলাম, এবার যার যার মত করে রাস্তা করে নাও!




সেনাশাষনের লিগেসি এবং সাম্প্রদায়িকতার সংস্কৃতি

যে বাংলাদেশের রামুতে বৌদ্ধ মন্দির পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে; যে বাংলাদেশের নাসিরনগরে হিন্দুদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে; সে বাংলাদেশের বাংগালি চলেশ রিসিল হত্যার, কল্পনা চাকমা গুমখুনের বিচার করে না!আজকের বাংলাদেশের উচ্চবিত্য গারো পরিচারক, পরিচারিকা কতটুকু পরিচ্ছন এবং নিবেদিত তা নিয়ে পরিতুষ্টির হাসি হাসে, আর মধ্যবিত্তের ভেতর যারা কথিত উচ্চশিক্ষার তকমাধারি, যাদের কাউকে কাউকে আমরা বলে থাকি এন্থ্রপোলজিস্ট তারা গারোকে গারো বলবে না কি মান্দি বলবে, তা নিয়ে বড়াই করে তাদের সেনাধ্যক্ষ কুটুমদেরর সাথে!

সেনাধ্যক্ষদের কথা ওঠালে, সেনাবাহিনির কথাও আসে!বাংলাদেশের ক্ষ্মতা পরিকাঠামোতে সেনাবাহিনি আমলাতন্ত্রের সামরিক শাখা ছাড়া আর কিছু নয়! আর যেহেতু এই ক্ষ্মতা পরিকাঠামো সচ্ছ নয়, কারো কাছে জবাবদিহি করছে না, তার অংশ বা শাখা হিশাবে সেনাবাহিনিও কারো কাছে জবাবদিহিতা করছে না!একই ব্যাপার খাটে আইনরক্ষার সাথে জড়িত পুলিশসহ অন্য বাহিনিগুলোর ক্ষেত্রেও!

RAB জাতিয় বাহিনিকে বলা যেতে পারে এই জবাবদিহিতাবিহিন, অসচ্ছ ক্ষ্মতা পরিকাঠামোর একটি রোগলক্ষন, কারন নয়!একই রোগলক্ষনে পতিত রাজনৈতিক দলগুলোর বিবিধ অংগ সংগঠনগুলো, যাদের ভুমিকা তাবেদার বাহিনির ঢালের মত!এরা জনগনের সাথে ক্ষ্মতার সাকো নয় বরং দুই পক্ষের প্রকট সিমান্ত!এই অসচ্ছ, জবাবদিহিতাবিহিন তাবেদারি সিমান্তে দাড়ানো যে কোন আদিবাসি গোষ্ঠি, সংখ্যালঘু গোষ্ঠি তাদের প্রাগ্রসর অর্জনগুলো হারিয়ে বসবে!কারন, মুলধারার সঙ্খ্যাগুরু গোষ্ঠি তাদের প্রাগ্রসর অর্জন, তাদের সায়ত্বশাষনের ইতিবাচক দিকগুলো ধারনে সচেতনতা হারিয়ে বসে আছে, আর যেটুকু ধারন করতে চাইছে তা তাদের ক্ষ্মতার স্বার্থসংশ্লিষ্ট!

ধরা যাক বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ৭২ এর সংবিধানের মুল স্তম্ভগুলো হারিয়ে যাবার দুর্টঘনাবহুল পারম্পর্জের কথা, ধরা যাক সিরিয়া, ইরাকের মত সেকুলার রাস্ট্রের বিদেশি অন্তর্ঘাতের মুখে চরম ধরনের ফ্যাশিবাদি সাম্প্রদায়িক মারনযজ্ঞে জড়িয়ে পড়ার কথা!উল্লেখিত প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে মুলধারার ক্ষ্মতা পরিকাঠামো জবাবদিহিতা, সচ্ছতা অনুশিলনের প্রয়োজন বোধ করে নাই এবং কাঠামোটির ভেতরে একের পর এক ফাটল তৈরি করেছে!একই পটভুমি ল্যাটিন এমেরিকা, আফ্রিকা, ইউরোপের কমিউনিজম পরবর্তি রাস্ট্রগুলোতে!বাংলাদেশে আদিবাসি গোষ্ঠিগুলো যে দমন, নিপিড়নের শিকার, পুর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে রোমানি জিপসিরা একই ভাবে দমিত, নিপিড়িত!পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে গনতন্ত্র তুলনামুলকভাবে সচ্ছ এবং জবাবদিহিতার জায়গাতে আসায় সাম্প্রদায়িক সহনশিলতাও তুলনামুলকভাবে বেশি!এতগুলো ব্যাপক মৌলবাদি সন্ত্রাসি ঘটনার পরেও মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর পশ্চিমের সংখ্যাগুরুরা ঢালাওভাবে চড়াও হয় নাই!

প্লেটোর গলাবাজিতে কবিতাও শরিক যখন

রবীন্দ্রনাথ তার সাহিত্যে সাওতালদের কথা, অপরাপর জাতিগোষ্ঠির কথা যতভাবে বলেছে, পরজাতি পাঞ্জাবিদের ওপর জালিওনওয়ালা গনহত্যার প্রতিবাদে যেভাবে নাইট খেতাব বিসর্জন দিয়েছে, পাকিস্তান আমলে এবং বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর বাংলাভাষি মুসলিম সাহিত্যিকের লেখনিতে সেভাবে অপর সম্প্রদায় বিশেষ করে আদিবাসিদের কথা সেভাবে আসে নাই! সৈয়দ হক, আল মাহমুদদের রাজনৈতিক বিশ্বাস, অনুশিলন কিছুটা ভিন্ন হলেও এদের সাহিত্য আবর্তিত হয়েছে চড়াদাগে জাতিয়তাবাদি সাহিত্যের বাতায়নেে!এদের পর যেসব নুরুল হুদা, ফরহাদ মাজহার জাতিয় তল্পিবাহকেরা এসেছে তারা আর চাড়াদাগের সৌজন্যতা দেখাবারও দরকার মনে করে নাই, ধর্মিও সাম্প্রদায়িকতা এদের কাছে হয়ে গেছে জাতিসত্ত্বাবোধক!শামসুর রাহমান, নির্মলেন্দু গুনের আপেক্ষিক ও ব্যাতিক্রমি অনুধাবন নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি, কিন্তু ফাকা গৌরবের ওপর দাড়িয়ে সংস্কৃতি ডাইনামিক হয় না।

পুলিশের সুপার মহোদয়ের মন্তব্য দিয়ে লেখাটি শুরু করেছিলাম, শেষে এসে কবিদের সৌজন্যতাবোধের কথা তুলে নৈতিক দায়ের দিকে ইঙ্গিত করেছি!এক অর্থে অবস্য বাংলাদেশ প্লেটোর আদর্শ রিপাব্লিকে রুপান্তরিত হয়েছে, যে রিপাব্লিক থেকে প্লেটো কবিদের উচ্ছেদ চেয়েছিল!বাংলাদেশের কবি অভিধাযুক্তগন কবিতা লিখছেন না কি রেথরিক করছেন?প্লেটো নিজেও কবিতা ও রেথরিক অর্থাৎ গলাবাজির সিমা সরহদ্দ ইচ্ছা করে গুলিয়ে ফেলেছিল, দর্শনকে জ্ঞানশাস্ত্রের কেন্দ্রে আনতে!বাংলাদেশের কবি ও শিল্পিরা দলভারি দর্শনগুলোর বিভিন্ন দিকে দাড়িয়ে যে সাংস্কৃতিক, ধার্মিক, রাজনিতিক, জাতভিত্তিক গলাবাজি করে থাকেন এবং সময় বিশেষে গলা বন্ধ রাখেন, তাতে পুলিশরুপি সামন্ত গোমস্তার হাতে ব্যাক্তি ও বুদ্ধির আরো বিনাশ ঘটার আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে!

চয়ন খায়রুল হাবিব
১/১২/১৬
ব্রিটানি