Sunday 17 April 2011

রাস্ট্রধর্ম বাংলা চাইঃ রাস্ট্রধর্ম বাংলা চাই না বৈদিক বা মোস্লেম পবনের নৌকায়

আজিম্পুরের ভাষা শহিদ'দের কবর থেকে চল অনুযায়ি একুশে ফেব্রুয়ারিতে যে প্রভাত ফেরির যাত্রা শুরু হয় শহিদ মিনার অব্দি , জানামতে এ-বছরের একুশে ফেব্রুয়ারিতে তা না হয়ে পুরা উদজাপন কেন্দ্রিভুত থাকে শহিদ মিনার'কে ঘিরে!সরকার বা বিরোধি দল নেতৃত্ব পর্জায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আদৌ আজিম্পুর গোরস্থানে এসেছিল কি না তাও স্পস্ট না!খোজ নিয়ে জেনেছি যে আসেনি!

রাস্ট্রধর্মটা কি জিনিস? রাস্ট্রভাষাটাই বা কি জিনিস?ভাষাভিত্তিক রাস্ট্রেও একক ভাষার জ়ায়গাতে অন্যান্য বহু ভাষার স্বিকৃতি থাকতে পারে!তফসিলি আকারে নয়, প্রধান প্রায়োগিক ভাষা হিশাবেই।বাংলার সাথে অহমিয়া ভাষার তেমন দুরত্ব নাই।কিন্তু বাংলাভাষি অভিবাসিদের সাথে অহমিয়াদের দা-কুমড়া সম্পর্ক তৈরি হয়েছে!কারন এই অভিবাসিদের অনেকেই হাজার বছরের বিদেশি বৈদিক সংস্কারের প্রতি যতটা অনুগত ঠিক ততটাই অবজ্ঞ্বা দেখায়েছে বাংলা ভাষার মুল সুত্রে বৈদিকদেরও আগের যে দেশি-কোল, মুন্ডা, ওরাও সাওতাল, গারো, কুকি, চাকমা, রাজবংশি, ভোটচিনা পাগান ভাষাগুলা তাদের প্রতি!

রব(ঈ)ন্দ্রনাথ আক্ষেপ করতেন যে বাজারে যা যা বাংলা অভিধান, সেগুলা আসলে সংস্কৃত অভিধান!দেশি সাংখ্য, যোগ চর্চাকারি সিদ্ধাদের লেখা চর্যাগুলা য্যামন হরপ্রসাদ'দের হাতে সংস্কৃতায়ন হয় তেমনি অনেক পরে দেশি পুথির ভাষার ঘটে ইসলামি করনঃ

"দিলসে বৈঠে রাম-রহিম দিলসে মালিক-সাই
দিলসে বৃন্দাবন মোকাম মঞ্জিল স্থান ভেস্ত পাই"

রব(ঈ)ন্দ্রনাথ আক্ষেপ করেছেন এবং কোন শব্দের ঈকার নিজে বাদ দিয়েছেন!কিন্তু সুনিতিকুমারেরা আবার ঈকার বসায়ে দিলে তা মেনে নিয়েছেন!একই ব্যপার আহমেদ শর(ঈ)ফেও!বিদেশি শব্দ মাত্রেই বাংগালির কাছে বিশিষ্ট এবং সে-বিশিষ্টতার সিলগালা হচ্ছে ঈকার, ঊকার, চন্দ্রবিন্দু!বিদেশি শব্দকে বিশিষ্ট করতে গিয়ে বাংগালি নিজের কাছে হয়ে গেছে মামুলি!আর পরিচয় বলতে বুঝেছে জমক এবং চমক!

বাংলার মৃগয়ানির্ভর ও মাতৃপ্রধান সমাজে বৈদিকদের বহু আগে দেবি বলে গন্য হয়েছিল তারা, শাকম্ভরি(দুর্গা), বাসুলি, মনসা যাদের সুত্র ধরেই আসে বনবিবি, ওলাবিবিরা!এই আদিধর্মের প্রান ভোমরা আমাদের চারপাশে ছড়ায়ে ছিটায়ে থাকলেও বৌদ্ধ, ব্রাক্ষন্য ও ইসলামি প্রভাবে অবিলুপ্ত!মানে, আছে কিন্তু আছে ছোটলোকের আচার হিশাবে!বাংগালির লাঙ্গলের ফাল আগ্রাসি বৈদিকেরা গ্রহন করলে তার প্রতিকায়ন ঘটে রামের স(ঈ)তাকে গ্রহন হিশাবে!

'হাজার বছর সংস্কৃতায়নের পর এই সেদিন অর্থাৎ ১৯৩০ অব্দিও (বাঙলাদেশের) কোন মাদ্রাসায় বাংলা হরফ চালু ছিলনা!মাদ্রাসা শিক্ষিতদের জন্য চিটাগাঙ্গে আরবি হরফে বাঙলা বইয়ের প্রতিলিপি তৈরি করা হত।'

উপরের উধৃতি ধার করা আহমেদ শ(রী)ফ থেকে!উনি বাংলাকে তার মত করে ''বাঙলা' লিখতেন!অথচ আহমদ শরীফ'ই প্রামান্যভাবে দেখায়েছেন বাংলা ভাষাভাষি কিরাত, নিষাদেরা ১৯৭১এর আগে অব্দি হাজার, হাজার বছর কিভাবে নিগৃহিত হয়েছে!আর যখন যট্টুকুও বা গৃহিত হয়েছে তার প্রতিদানে তাকে কতটুকু শ্রমদাশে পরিনত করা হয়েছে!উল্লেখ্য যে উপরের উধৃতিতে আহমদ শরীফ 'আরবি'তে আরো অনেকের মত ঈকার বসায়ে দেন নাই।এর প্রত্যুত্তরে আমরা ১৯৩০ দশকের ইংরেজ যাজকিয় তত্বাবধানে তৈরি কোলকাতার বাংলা অভিধান অক্ষরে অক্ষরে অনুসরন করবো কি না সে প্রশ্ন তোলার সময় অনেক আগেই এসেছে!

আহমদ শরীফের মত করে 'বাঙলা' লিখতে গেলে ইউনিকোডে অনেক কসরতের প্রয়োজন!মুস্তাফা জব্বারেরা ইউনিকোড ঠেকাতে হাইকোর্ট যাবেন, কিন্তু হাইকোর্ট কবে যে বাংগালি-বাউলের কাছে আসবেঃ

'সুন্নত দিলে হয় মুসলমান
নারি(ঈ!) লোকের কি হয় বিধান
বামন(ণ!) চিনি পৈতার প্রমান
বামনি(ণী) চিনি কি ধরে'

প্রভাতফেরিটা আসলে মনের ব্যাপার!রাস্ট্র তার আনুষ্ঠানিকতা দিয়ে কি করে না করে তারা সাথে ভাষার ডাইনামিজম সঙ্গতি রক্ষা করলে বাংলাসহ আরো অনেক ভাষাই হারায়ে যেত!এখন দরকার বৈদিকতা, বৌদ্ধিকতা এবং ইসলামিকরনের ভিতরে গুমখুন হওয়া আদিধর্ম, আদিবাসিদের ভাষাগুলার আরো নিবিড় প্রায়োগিক সুরতহালঃ নানা বানান গাভি(ঈ)রে ভাই একই বরন(ণ) দুধ!

চখাহা
১৮/০৩/১১
ব্রিটানি









.