Monday 7 February 2011

প্রতিবাদ ও প্রার্থনাঃ ফতোয়াবাজদের হাতে নিহত হেনার স্মরনে


হেনা

ঘুম ভেঙ্গে যা যা করবার তা তা করতে করতে
দেখলাম আসলে আমার ঘুম এখনো ভাঙ্গে নাই

চারপাশে একটার পর একটা ছোট বড় বিভিন্ন আকৃতির আয়না
অনেক অনেক হেনাঃ অনেক অনেক অবচেতনাঃ

১৪ বছরের বালিকা- আমার কন্যা
আলোকিত আতালে উঠবার সময় বার বার থমকাচ্ছে

কারন ফতোয়াবাজ়-পিশাচেরা ওকে টেনে ধরে রাখতে চাইছে পাতালে

পারবেনা

আয়নাগুলা ভাংতে ভাংতে আদলভাঙ্গা টুকরা টাকরাগুলাতে
যে চোখগুলাকে দেখলাম তাদের আর কখনো পুরাপুরি ঘুম আসবে না

চখাহা
৮/০২/১১
ঢাকা
সিলভিয়া প্লাথঃ

ফাইয়াজদের পাচিল ঘেরা মিহি ঘাসে ছাওয়া

ফুটবল মাঠের চেয়েও বড় বিশাল বাগানের কোনে
একতলা বাংলো বাড়িতে 'সুর্জদিঘল বাড়ি' সিনেমার ডলি আনোয়ারের
জলপাই-জিপসি-যুগলবন্দে হারাবার সঙ্কেত-সুত্রগুলো ভাবতে ভাবতে

ফাইয়াজদের পাচিল ঘেরা মিহি ঘাসে ছাওয়া
ফুটবল মাঠের চেয়েও বড় বিশাল বাগানের কোনে
লারা, প্রিসিলা, ফাইয়াজের সাথে
ঢুকে গেলাম সিলভিয়া প্লাথের সাজানো হালকা লাল ঘন্টিফুলের বয়ানেঃ

জিবনভর নিখোজ আর আত্মহননের
সমিল সম্পর্কসুত্র ধরে ধরে আমাদের প্রত্যেকের জন্মস্থানি দোলনা
এবং জানাজার খাটিয়ার মাঝখানে
লম্বা দিয়ে শোয়া সিলভিয়ার নির্ভার বেলুন ওড়ানো নিমন্ত্রনে

ক্যাম্পাস এবং ক্যান্টনমেন্টের মাঝখানে
চর কামরাঙ্গি থেকে আজিম্পুর গোরস্থানে
কাচা বাশের চাটাইতে ঘোর শ্রাবনের বর্শনে
লালবাগ কেল্লার সোনালি রুপালি চামচ আর বর্তনে

জন্তু ও যন্ত্রের ভাষনে টেড হিউজ ঢাকাতে বয়ে এনেছে
সিলভিয়ার ফুলেল নিষাদঃ
কবিতা বিশম্বাদের নায়ক খলনায়কেরা সবাই জুটেছে
টেডের আমন্ত্রনে রমনার পাশে ভুতগ্রস্থ শেরাটনে

পার্টিতে প্রবেশমাত্র ফাইয়াজ বদলালো কৃশ্নচুড়ায়
লারা নিলো কাকাতুয়ার বেশ আমি টিয়াপাখি
প্রিসিলা রাধাচুড়া
ডাবল, ট্রিপল, কোয়ড্রুপল রোলে
শটের পর শট রাম ভোদকা হুইস্কির মিশেলে

মাতাল পাপড়ি আর বসন্তের পালক বদলে বদলে
আমরা অবতরন করলাম রবিন্দ্রনাথ ও কাদম্বরি দেবির মাঝখানে
এক্ষন ঘোর বর্শার সুন্দরবনে পরক্ষনে দার্জিলিঙ্গের কমলাবাগানে

সেসনা বিমানে বিধ্বস্থ হতে হতে লারা-কাকাতুয়া জানতে চাইলো
টেডের কাছেঃ কেন কেন আপনি এরকম উৎকট জন্তু-প্রেমিক
'যন্ত্রের ভাষা জেনে আজ আমি জানি জন্তুরাই আসলে প্রকৃত রোমান্টিক'
এরকম বলে টেড গাল জুড়ে দেখালো সিলভিয়ার কাচা কামড়ের দাগ

রাধাকে প্রিসিলার-রাধাচুড়ায় কৃশ্নকে ফাইয়াজের-কৃশ্নচুড়ায়
কাকাতুয়া-লারাকে টিয়াটিয়া-চয়ন এবার নৈশব্দের সিলভিয়াতে শুধায়ঃ
নিজেদের থেকে কতদুর গেলে
আমাদের ভাবনাগুলো সম্পুর্নতা পায়

খুকিবুড়ি সিলভিয়া রাধার কোরক কোক কোরক কো
খোকাবুড়া টেড আমাদের কৃশ্নকলি
পাহাড় কাটা চা বাগানে হাজারে হাজারে
নেপালি আর মৈথিলি কুলি

মিতালি শব্দটার বহিরঙ্গে প্রচন্ড হাততালি
অন্তরঙ্গে নিকষ চুপচাপ এক নাগা সন্যাসি
সে বরফ গলা টুপটাপ সে-স্মরন সে-হরিদুয়ার
সে নেমে আসে সিলভিয়া সকাশে প্রকৃতির নাভিমুলে
জান্তবতা ও যন্ত্রের জটাজুট বেয়ে
কুম্ভের মেলাতে ত্রিশুল ও ত্রিশুলার অবগাহনঃ

কখন সে ঝরেছিল কুয়াশায় তা কিন্তু কেউ জানে নাই
খুব ধিরে ধিরে খুবই কাছাকাছি পরম বাইপোলার ঝর্নাতলায়

সিলভিয়া আমাদের সকলের প্রথম খেলনা বেহালার উদ্বোধন
আমার জমজ বোন

চয়ন খায়রুল হাবিব
১০/০৪/২০১০
ব্রিটানি

ওফেলিয়াঃ

ইউক্যালিপ্টাস ফুলেরা ইউক্যালিপ্টাস গাছতলে
উইঢিবিগুলাকে ফিশফিশাতে শুনে
অপেক্ষা করতে থাকলো
কয়েকশ বছরের গুর্দাফরাসে রসালো
ভাইকিং দরবারের মুর্দাফরাসি বাস্তবতায়

খুলি চালাচালি কথাকলি চোক্ষে শুক্লপক্ষি নিলামে
মাছওয়ালারা সব ঝাকা উপুড় করে করে দেখালো
বিয়ার সাজপোশাক পরা ওফেলিয়ার লেজ মুড়া পেটি
এ হাকেঃ দে রে দে আমারে সাত ভাগা ওফেলিয়া দে
ও হাকেঃ না, না সবগুলা ভাগা আমার ডুলাতেই দে
পেরেশানির কিছু নাই স্যার
আপারে নিয়া ঘুইর‌্যা আসেন
ইস্পেষাল বটি আনছি
ঝাকা ভর্তি আরো আছে আরো আছে
মাছকন্যার পেট কাটবে মনপছন্দ মাছকন্যার সেই সহদর

ভবিষ্যতবানি বেচতে গিয়ে যেই উভচর
ইউক্যালিপ্টাস গাছদের চিত্তের বড়শি চঞ্চলতার ফাতনা ভেবে
নিজেরাই নিজেদের বসত উজ়াড় করে
উইপোকারা মিলায়েছিল এবং মিলাবার আগে
চিল্লায়েছিলঃ

কে আছে আমাদের ভিতর যে পলিটিকালি কারেক্ট
দৈবের প্লাঞ্চেট না কি পাগলের পাগল দেবদুত হ্যামলেট
ওফেলিয়ারে আয় আয় বের হয়ে আয়
বটিতে গলাটা পেতে দে

কানসা উল্টায়ে দেখাই তুই এখনো কিরকম তাজা
বরফের কুচি মাখা তবুও কেমন গা ছম ছম গরম গরম
স্যারের বৌরা কিন্তু বুঝেছে ভালো
আজকের রাত থেকে বিছানায় তিন জন

মাছের আজ্ঞায় মোদের ইচ্ছায়
মুগের ডালের সাথে লাউঘন্টের ভিয়াগ্রায়
বাইরে পাহারা দিবে ঘোর লাঘা বেঘোর
উইপোকাদের ঢিবিগুলা আসলে বাপের বাড়ি থেকে উড়াল
ওফেলিয়ার পোষা কবুতরদের বানপ্রস্থ কবর

ইউক্যালিপ্টাস ফুলেরা ইউক্যালিপ্টাস গাছতলে
উইঢিবিগুলাকে ফিশফিশাতে শুনে...
মাছওয়ালারা মাছওয়ালিরা জানে
মাছের সওয়ার হ্যামলেট রাজকুমার কাশছে শেক্সপিয়ারের অতিরঞ্জনে

চয়ন খায়রুল হাবিব
৩০/০৪/২০১০
ব্রিটানি