Monday 23 August 2010

গৌরনদির উপকথা

উপকথাই যে কোন জনগোষ্ঠির মুল প্রানস্পন্দন!নিচের খবরগুলা আমার খুব মজা লেগেছে! যেমন বানানে ও বাকধারায় ছিল তেমনভাবেই পরিবেশিত হলো!শুধু ঘটনাক্রম নিজের মত সাজায়ে একটু পরিক্ষাধর্মিতামতঃ খবরকে উপকথায় প্রমোশান দিয়ে একটা দর্পন তৈরির প্রয়াস!

অমর প্রেম
আহুতিবাটরা গ্রামের মৃত পুলিন হালদারের পুত্র ২৯ বছরের বিপ্লব চন্দ্র হালদার জানান, প্রেমের সম্পর্কে একই গ্রামের তার পিসতুতো বোন হরিচাঁদ হালদারের কন্যা ২২ বছরের শিল্পী হালদারকে  বিবাহ করার অপরাধে গ্রামের মোড়ল মনোতোষ হালদার, শৈলেন হালদারসহ তাদের সহযোগীরা গতকাল সোমবার তাকে তার বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে দেয়নি।আক্ষেপ করে বিপ্লব বলেন, ভালবেসে বিয়ে করা যদি অপরাধ হয়। তাহলে দু’জনের জীবন দিয়েই সে ভালবাসা অমর করে যাব।

বিপ্লবের স্ত্রী শিল্পী হালদার জানান, ভালবেসে বিয়ে করার অপরাধে তার পিতা হরিচাঁদ হালদারের ওপর গ্রাম্য মোড়লরা বিভিন্ন ধরনের চাপ সৃষ্টি করেন। গ্রাম্য মোড়লদের অব্যাহত চাপের মুখে গত রবিবার ১৫ আগস্ট  বিকেলে মোড়লদের উপস্থিতিতে তার পিতা তাকে মৌখিখ ভাবে তেজ্য ঘোষনা করেছেন।

নস্টা শিশু
গৌরনদী উপজেলার বার্থী বাজার সংলগ্ন মহাসড়কের পাশে খুপরি ঘর করে বসবাস করা ভূমিহীন আলম বেপারী জানান, গত ৭ বছর পূর্বে তিনি স্ত্রী নাছিমা বেগম ও একমাত্র কন্যা সন্তান আনোয়ারা খানমকে নিয়ে বার্থী বাজার এলাকার সড়ক ও জনপথের জমিতে জীর্নশীর্ন একটি কুড়ে ঘর নির্মান করে বসবাস শুরু করেন।

গত শুক্রবার সকালে প্রতিদিনের ন্যায় তিনি দিনমজুরের ও তার স্ত্রী নাসিমা বেগম ঝিয়ের কাজ করতে যান। ওইদিন বিকেল তিনটার দিকে তার বসত ঘর সংলগ্ন বার্থী বাজারের তেলের দোকানদার উপজেলার বড়দুলালী গ্রামের এসাহাক মোল্লার পুত্র রিপন মোল্লা (১৮) তার আটবছরের কন্যা আনোয়ারা খানমকে কথা বলার জন্য দোকানে ডেকে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে বন্ধ দোকানের মধ্যে নিয়ে রিপন শিশুটিকে ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। এ সময় শিশু কন্যা ডাকচিৎকার শুরু করলে বখাটে রিপন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধরে খুটির সাথে আঘাত করে। এতে শিশুটি রক্তাক্ত জখম হয়। এপর্যায়ে শিশুটি কান্নাজুড়ে দিলে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে। আহত শিশুটিকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে রিপনের লোকজন বাঁধা প্রদান করে। পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে শিশুটিকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

ভূমিহীন আলম বেপারী আরো জানায়, তিনি ও তার স্ত্রী বাড়িতে ফিরে এ ঘটনা শুনে কন্যা আনোয়ারাকে নিয়ে রাতে তারা বাজার কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও রিপনের নিকট আত্মীয় মোঃ সহিদুল ইসলাম বেপারীর কাছে বিষয়টি জানিয়ে বিচার চান। তারা বিচার না করে উল্টো তাদের শ্বাসিয়ে দেয় এবং এ ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। খবর পেয়ে গত শনিবার বিকেলে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছলে শিশু কন্যা আনোয়ারা ও তার বাবা-মা অসংখ্য লোকের সামনে এ ঘটনার বর্ননা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাজার কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ সহিদুল ইসলাম শিশুটিকে নষ্টা মেয়ে আখ্যায়িত করে আগামী তিনদিনের মধ্যে স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে বাজার কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ সহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তারা স্থান ত্যাগের নির্দেশ প্রদানের কথা স্বীকার করে বলেন, মেয়েটি নষ্টা প্রকৃতির। বাজারের স্বার্থেই এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সর্বহারা নেতা
চরপালরদী গ্রামের দুর্ধর্ষ সর্বহারা নেতা খোকন চৌকিদারকে গতকাল রবিবার দুপুরে থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত খোকন চৌকিদার (৪০) চরআইরকান্দি গ্রামের বহুল আলোচিত শাহ আলম হত্যা মামলার পলাতক আসামি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে সে গৌরনদী ও পাশ্ববর্তী কালকিনি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আত্মগোপনে ছিলো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার দুপুরে কালকিনি থানা পুলিশ খোকন চৌকিদারকে রমজানপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

পাগল
“হেই ছোট্টকালে মায় মোগো দুই ভাইরে থুইয়া মইরা গ্যাছে। বাপে (পিতা) আবার বিয়া হরছে। হেইয়ার কয়দিন পর বাপেও মইরা গ্যাছে। মোর মায় মরার পর মুইবোলে পাগল হইয়া গেছি। হেইয়ার লাই মোর ছোট্ট মায় মানু (লোকজন) লইয়া মোর পায়ে শিকল বাইন্দা দেছে। হেইয়ার পর থেইক্কাই মুই পায়ে শিকল বাঁন্দা অস্থায় বাইচ্চা আছি। ভাই আমনে মোর পার শিকলটা খুইলা দ্যান। মুই হ্যামনেগো লাহান ঘুইরা ঘুইরা বাঁচতে চাই।” শিশু কান্নার মতো বিলাপ করে কথাগুলো বলছিলেন গৌরনদী উপজেলার কালনা গ্রামের মৃত ভাষাই হাওলাদারের পুত্র আব্দুল হাকিম হাওলাদার (৪০)।

৫ বছর বয়সে হাকিমের মা জরিনা বেগম মারা যায়। পরবর্তীতে তার পিতা ভাষাই হাওলাদার দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করে আমিরোন নেছাকে ঘরে আনেন। শিশুকালে হাকিম ঘুমের ঘোরে কি যেন স্বপ্ন দেখে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। সেই থেকে হাকিম পাগল হয়ে গেছে বলে তার ছোট মা আমিরোন নেছা এলাকায় রটিয়ে দেয়। লোকদেখানো ভাবে তিনি হাকিমকে বিভিন্ন ফকিরের কাছে নিয়ে যায়। তারা (কতিথ ফকিররা) হাকিমকে ভাল করার কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে হাকিম আরো অসুস্থ হয়ে পরে। পরিবারের লোকজন হাকিমকে বিয়ে করালে তার ঘরে একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন করে। পরবর্তীতে হাকিমের স্ত্রী রহিমা বেগম শাশুড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে হাকিমকে ফেলে চলে যান।

হাকিম হাওলাদার আরো বলেন, ভাই মুই পাগল না, মোরে পাগল কইরা রাখা হইছে। মুই অন্য দশজনের মতো বাঁচতে চাই। কিন্তু মোরে কেন জানি পাগল কইরা রাখছে। হাকিম তার সৎ মাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দশ বছর ধইরা উনি মোর পা শিকল দিয়া বাইন্দা রাখছে। একটা সুস্থ মানুষরে পাগল বইল¬া তার পায়েও যদি দশ বছর ধইরা শিকল বাইন্দা রাখা হয় হেলে হেওতো পাগল হইয়া যায়। মুই বাঁচতে চাই। মোর কতা কেউ বিশ্বাস করেনা যে মুই পাগল না। মুই এই বন্দি দশা থেকে বাঁচতে চাই।

এ প্রসঙ্গে আমিরোন নেছা বলেন, হাকিম মানষিক ভারসাম্যহীন, তাই তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।
 
মুড়ি
অধিকাংশ রোজাদারের পছন্দ গৃহস্থবাড়ির মোটা চালের মুড়ি। আর সে কারণেই ঝালকাঠির তিমিরকাঠির মুড়ির বিশেষ কদর। বরিশাল সদর উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার একটি গ্রাম তিমিরকাঠি। সেখানে প্রায় প্রতি পরিবারই মুড়ি ভাজা ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত।

এ ছাড়া উপজেলার দক্ষিণ তিমিরকাঠি, ভরতকাঠি, দপদপিয়া, কুমারখালী ও খেজুরতলা এবং বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার জুরকাঠি, সোহাগকাঠি, বীর নারায়ণ, কয়ার চর, বাখরকাঠি, চৌদ্দপুরা ও বুড়ির হাটের মানুষ মুড়ি উত্পাদনের সঙ্গে কমবেশি জড়িত। এই শিল্পকে কেন্দ্র করে ওই অঞ্চলে গড়ে উঠেছে মুড়ির হাট, আড়তদারি প্রতিষ্ঠান, ধান মাড়াই ও চাল ছাঁটাইয়ের কলসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। তিমিরকাঠিতে মুড়ি উত্পাদনে সংশ্লিষ্ট নির্মল চন্দ্র দাস বলেন, রোজার মাসে বেশি চললেও ১২ মাসই মুড়ি ভাজার সঙ্গে জড়িত তাঁরা। হাতে ভাজা হওয়ায় তাঁদের মুড়ির চাহিদা বেশি। স্বাদে-গন্ধে এই মুড়ি বাজারের অন্যান্য মুড়ির চেয়ে আলাদা। তাই রমজান মাসজুড়ে মুড়ি বেচা-কেনার ধুম পড়ে তিমিরকাঠিতে।

তিমিরকাঠির আশরাফ আলী হাওলাদার (৮৫) ও ফাতেমা বেগম (৫০) বলেন, ‘এই মুড়ি সারা দ্যাশে নামকরা। মোগো মুড়ি সেরা মুড়ি। এই মুড়ি খাইলে কোনো রোগ হইবে না। আমরা লবণ, পানি, বালি দিয়া মুড়ি ভাজি। কোনো সার দেই না। হেইলইগ্যা মোগো মুড়ি মজা লাগে।’

থানা কোয়ার্টার
গৌরনদী থানার কোয়াটার থেকে কাগজপত্র হারিয়ে যাওয়ার এক তথ্য পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে থানায় সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, কোয়াটারের এস.আই মিজানুল হকের বাসা থেকে তার স্ত্রী নাজনীন হোসাইন আখীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ পরীক্ষার মূল সনদপত্র হারিয়েছে। আখী জানান, তার রাজাপুর গার্লস হাইস্কুল থেকে ১৯৮৯ সালে বিজ্ঞান শাখা থেকে প্রথম বিভাগ পাস করা এসএসসি পরীক্ষার যার রোল নং-৮১, রেজিঃ নং-৭১৬৭১, বোর্ড-যশোর এবং রাজাপুর ডিগ্রী কলেজ থেকে ১৯৯১ সালে এইচ.এস.সি’তে মানবিক বিভাগে পাস করা যার রোল নং-৯২, নিবন্ধন নং-৩১০৬৬ সহ মূল্যবান কাগজপত্র হারিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজি করেও কোন সন্ধান না পেয়ে অবশেষে গত ১২ আগস্ট গৌরনদী থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন যার নং-৫১৪।

গজার মাছ
সিলেটের হযরত শাহজালাল (রঃ) এর মাজারের ঐতিহ্যের নিদর্শন হাজার-হাজার গজার মাছ বরিশালের গৌরনদীর উত্তর ধানডোবা গ্রামের মরহুম ওয়াসেল ফকির ওরফে ওয়াসেল কারিকরের বাড়ির পুকুরেও আছে। এখানে প্রতিদিন বহু লোক মনের বাসনা পূরণের জন্য মানত করে মাছের জন্য খাবার নিয়ে আসেন।

মরহুম ওয়াসেল ফকির ওরফে ওয়াসেল কারিকরের ভাই জোনাব আলী ফকির বলেন, প্রায় ৪১ বছর পূর্বে আমার ছোট ভাই হযরত শাহজালাল (রঃ) দরগার বাৎসরিক ওরশে গিয়ে একটি গজার মাছ নিজ বাড়ির পুকুরে এনে রাখার জন্য মাজারের প্রধান খাদেমের কাছে অনুরোধ করেছিলেন।খাদেম সাহেব তাকে বলেছিলেন, “এ পুকুর থেকে মাছ নেয়ার দরকার নেই, তুমি তোমার এলাকায় গিয়ে এক নিয়তে ২টি গজার মাছ কিনে তোমার পুকুরে ছেড়ে দিবে”!

তার কথার ওপর বিশ্বাস করে ওয়াসেল ২ টি গজার মাছ কিনে তার বাড়ির পুকুরে ছেড়ে দিলে বছর ঘুরে আসতে না আসতেই মাছ দুটো ৪/৫ ফুট লম্বা হয়। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে অসংখ্য গজার মাছে তার পুকুর সয়লাব হয়ে যায়। তিনি আরও জানান, ‘৮৮ ও ‘৯৮ এর বন্যার পানিতে পুকুর ডুবে গেলেও একটি মাছও অন্যত্র যায়নি। তাছাড়া মাছের কোনও সমস্যা হলে ওই বাড়ির মুরব্বীদের স্বপ্নে দেখানো হয় এবং সে অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

নিখোজ সংবাদ
চররমজানপুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী মফিজুর রহমান ঘরামী (৪৮) গত তিনদিন থেকে রহস্যজনক ভাবে নিখোজ হয়েছেন। এ ব্যপারে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে থানায় সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে।

মফিজুর রহমান ঘরামীর জামাতা আনোয়ার হোসেন জানান, গত ১৭ আগস্ট রাতে তার শশুড় নিজবাড়ি থেকে তার (জামাতার) ঢাকার বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। এরপর থেকে তার কোন সন্ধান মেলেনি। পারিবারিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে অপহরনের পর প্রবাসী মফিজুর রহমানকে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখা হয়েছে।

মাদক সম্রাজ্ঞ্বি
গত ঈদুল ফিতরের পূর্বে (গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া থেকে বরিশালগামী তুহিন পরিবহনে গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে কুষ্টিয়া সদর থানার বারমাইল গ্রামের সালাম মিস্ত্রির স্ত্রী মাদক সম্রাজ্ঞী জুলেখা বেগমকে (৩০) গ্রেফতার করে। এ সময় তার কোমরে বাঁধা এককেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।গ্রেফতারের পর জুলেখা বেগম পুলিশকে জানিয়েছে, সে দীর্ঘদিন থেকে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইনসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে আসছে। জুলেখা গ্রেফতারের পর থেকেই এখানকার মাদক বিক্রেতারা ঝিমিয়ে পড়ে।

গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, ইতিপূর্বে উপজেলার একাধিক চিহ্নিত মাদক বিক্রেতাদের গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারনে ওইসব মাদক বিক্রেতারা কয়েকদিন কারাভোগ করে জামিনে বেড়িয়ে তারা পূণরায় ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান বরাবরই ব্যর্থ হতে চলছে। তিনি আরো বলেন, আমি যতদিন এ থানায় রয়েছি ততোদিনই শুধু মাদক নয়, রোমিও উৎপাত, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চরমপন্থী সর্বহারা, জঙ্গী দমনসহ যেকোন অপরাধ দমনে সাদা পোষাকে থানা পুলিশের এ বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পুলিশের দুরবস্থা
জাতীয় সড়ক ও মহাসড়কে নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করার লক্ষে বরিশাল বিভাগের একমাত্র হাইওয়ে থানাটি অবস্থিত বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের পাশ্ববর্তী গৌরনদী অডিটোরিয়াম ভবনে। ভবনটি জরার্জীন হওয়ায় ঘরের ভীতর ঘর নির্মান করে বসবাস করছেন থানার থানার অফিসারসহ ২৩ জন পুলিশ সদস্য।

গৌরনদী হাইওয়ে থানার ইনচার্জ মোঃ মোজাম্মেল হোসেন জানান, একটু বৃষ্টি হলেই ভবনের বারান্দাসহ মেঝে হাঁটু সমান পানি জমে যায়। এছাড়াও টিনের ছিদ্র দিয়ে পানি পরে পুলিশ সদস্যদের বিছানাপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে পুলিশ সদস্যরা ঘরের মধ্যে পলিথিন টাঙ্গিয়ে (ঝুঁলিয়ে মাঁচা তৈরি করে) জরার্জীন ভবনেই বসবাস করছেন। সংশ্লি¬ষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একাধিকবার পরিদর্শনে এসে হাইওয়ে থানার পুলিশ সদস্যদের এ চরম দুভোর্গ স্ব-চক্ষে দেখলেও অদ্যবধি ভবনটি সংস্কারের জন্য কোন উদ্যোগ গ্রহন করেননি।

অলৌকিক
মৃত বিশ্বনাথ বিশ্বাসের পুত্র সুখদেব বিশ্বাস দেবী মনসার স্বপ্নে প্রাপ্ত নির্দেশে পূর্ব ঘোষণা দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মনসা পূজার দিন অগ্নিকুন্ডের আয়োজন করেন। সুখদেব পেশায় একজন মিষ্টির কারিগর। বর্তমানে তিনি সংসারের প্রতি উদাসীন। সংসার জীবনে সে ১ পুত্র সন্তানের জনক। তাকে এ পরীক্ষার জন্য স্ত্রী সুলতা বিশ্বাসসহ বাড়ির লোকজনে নিষেধ করলেও সুখদেব মনসার নির্দেশে ছিলেন অনড়। দেবীর নির্দেশে পূজার পূর্ব রাত্র থেকে অগ্নিপরীক্ষা পর্যন্ত তিনি আহার এবং কথা বলা থেকে বিরত ছিলেন।

সুখদেব জানান, খুলনায় মিষ্টির দোকানে কাজ করার সময় থেকেই সে মনসা দেবীর পূজা-অর্চনা করে আসছেন। বিগত ৫ বছর পূর্বে বাড়ি ফিরলে দেবী মনসা তার বসতঘরের এক কোণে জাগ্রত হয়। প্রথমে ঘরে পূজা শুরু করলেও দেবীর নির্দেশে ঘরের পাশে সুখদেব আলাদা একটি মন্দির নির্মান করে পূজা-অর্চনা করতে থাকেন। এরমধ্যে তিনি মনসা দেবীর ভক্ত হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেন। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন লোক বিভিন্ন সমস্যা ও রোগবালাই নিয়ে তার কাছে এসে উপকৃত হন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সুখ দেবের শিষ্যসহ হাজার-হাজার ভক্তরা অলৌকিক এ ঘটনা দেখতে জমায়েত হতে শুরু করেন। সবাই রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষায় ছিলেন অলৌকিক এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করার জন্য। অবশেষে হাজার-হাজার লোকের উপস্থিতিতে তার বাড়ির মন্দিরের সামনে ১০ মন লাকড়ি পুড়িয়ে ১০ হাত দৈর্ঘ্যরে জ্বলন্ত কয়লার অগ্নিকুন্ডে সুখদেব হেঁটে ৫ বার প্রদক্ষিণ করেন।

কোটালীপাড়া উপজেলার নৈয়ারবাড়ি গ্রামের অপূর্ব জয়ধরের মা উর্মিলা জয়ধর বলেন, আমার ৯ বছরের নাতী অতীশ জয়ধর মানসিক ও শারিরীক প্রতিবন্ধ্যতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তার চিকিৎসার জন্য দেশের ও ভারতের একাধিক ডাক্তার বিফল হলে আমরা কবিরাজী চিকিৎসায়ও ব্যর্থ হই। এক পর্যায়ে লোকমুখে সুখ দেবের নাম শুনে তার স্মরণাপন্ন হলে তার (সুখদেবের) চিকিৎসায় অতীশ জয়ধর আরোগ্য লাভ করে। অগ্নিকুন্ড প্রদক্ষিণ শেষেও সুখ দেব ছিলেন সুস্থ্য ও স্বাভাবিক। এ ব্যাপারে রাজিহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন সিকদার বলেন, ঘটনাটি অলৌকিক। আমি নিজেও তা প্রত্যক্ষ করেছি। এরমধ্যে প্রতারণার কোন আশ্রয় নেই।

মারামারি
বারপাইকা গ্রামে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হামলা-পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষে মহিলাসহ ৫জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত একজনকে বরিশাল শেবাচিম ও অন্যান্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

আহত সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের শ্যামল বল্লভের হাঁস মারাকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে শ্যামলের পুত্র রাখাল বল্লভ প্রতিপক্ষ সুনীল বল্লভকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এ ঘটনার জেরধরে দু’দফা হামলা ও সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বিভা বল্লভ, শিপ্রা বল্লভ, রাখাল বল্লভ, বিভিশন পান্ডে আহত হয়। গুরুতর আহত সুনীল বল্লভকে আশংকাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
 
জিবনানন্দ
আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা মনসা মন্দিরে গতকাল মঙ্গলবার বাৎসরিক পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ভক্ত ও পূজারীবৃন্দ বিষহরি দেবী মনসার মন্দিরে এসে তার তুষ্টি অর্জনের জন্য মানত ও পূজা দেন। পূজা উপলক্ষে ৩ দিন ব্যাপী রয়ানী গান গত সোমবার সমাপ্ত হয়েছে। মন্দির প্রাঙ্গনসহ গোটা এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়। মন্দির চত্বরসহ গোটা গৈলা এলাকায় দিনব্যাপী মেলা বসে। অর্ধ লক্ষাধিক ভক্তরা দুধ, কলা, মিষ্টি নিয়ে দেবীর চরণে পূজা দেবার জন্য ভিড় করেছেন। পূণ্যের আশায় দর্শণার্থীরা মন্দির সংলগ্ন দীঘিতে স্নান করেছেন। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ভক্ত ও পূজারীবৃন্দ মনসা মন্দিরে এসে দেবীর তুষ্টি অর্জনের জন্য মানত ও পূজা দেন।

ইতিহাস, মন্দির পরিচালনা কমিটি ও প্রবীণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছে, ৬ শতাধিক বছর পূর্বে কবি বিজয় গুপ্ত মন্দির স্থাপন করেন। তার বহু বছর পরে রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের মা একবার এ মন্দিরটির সংস্কার করেন। এরপর বিভিন্ন সময় সংস্কার করা হলেও ২০০৫ সালের শেষেরদিকে ঐতিহ্যবাহী মনসা মন্দিরে নতুন করে পিতলের দেবীমূর্তি স্থাপিত হয়। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় মূল দেবীমূর্তি চুরি হয়ে গিয়েছিল। পরে বিভিন্ন অনুদানের মাধ্যমে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে মন্দির নির্মাণ, দীঘির ঘাটলা, স্নানঘর, আটচালা নির্মাণ কাজ চলছে।

১৫ই আগস্ট
প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোঃ কামরুল ইসলাম। সোমবার রাতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গৌরনদী বাসষ্ট্যান্ডস্থ একতা ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল সমবায় সমিতি লিমিটেডের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি করেন।

আলোচনা সভায় সমিতির সভাপতি জহির রায়হানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মাহবুব আলম, সমিতির সহসভাপতি মুরাদ কাজী, সাধারন সম্পাদক সুব্রত রায়, সহসম্পাদক সুজন মীর, লাইন সেক্রেটারী সুমন মোল্লা প্রমুখ। আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌর জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা জাকির হোসেন, জামায়াত নেতা মাওলানা নজরুল ইসলামসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। আলোচনা শেষে দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোঃ কামরুল ইসলাম।

শ্রাদ্ধ
আহুতিবাটরা গ্রামে মোড়লদের সকল বাঁধাকে উপেক্ষা করে গতকাল বুধবার দুপুরে বিপ্লব চন্দ্র হালদার তার পিতার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করেন। থানা পুলিশ ও সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে বিপ্লবকে মন্ত্র পাঠ করান স্থানীয় ব্রাক্ষ্মন রনজিত চক্রবর্তী ও বিপ্লবের গলার ধরা কাটেন স্থানীয় বিমল চন্দ্র মন্ডল।

এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি অশোক কুমার নন্দি বলেন, পরবর্তীতে ত্যেজ্য কন্যার বিষয়টি নিয়েও বসা হবে। তিনি আরো বলেন, বিপ্লবের ওপর গ্রাম্য কোন মোড়ল চাপপ্রয়োগ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চয়ন
২৪/০৮/১০
ব্রিটানি

সুন্দরের উপকথাঃ সুন্দরের গনিত এবং সুন্দরের স্বার্থপর

হননের উপকথা ১ঃকবি যেভাবে বেচে থাকে, কবি যেভাবে মরে যায়

হননের উপকথা ২ঃ স্ট্যাম্পে লিখে ফেললে তা না কি আর বদলানো যায় না