Monday 14 June 2010

হননের উপকথা ২ঃ স্ট্যাম্পে লিখে ফেললে তা নাকি আর পাল্টানো যায় না

উল্টায়ে বললে ভ্যান আর সাইকেলঃ
কাঠের তক্তায় চাকার বদলে বেয়ারিং বল

শিশুবৃক্ষ বিনাশে বানান সঠিক লোকজন এত সিদ্ধ্বহস্ত যে
রাজাদের অভিধান থেকে শিশুবৃক্ষরা কেবল শেখে আত্মহননের কৌষল

বাংলার অক্ষরগুলো
এক জন আরেক জন'কে ঠ্যালে জল জংলার কালবেলায়ঃ
সালোক সংশ্লেষন কঠিন শোনালেও
মুল মন্ত্রনায় তা আাসলে আলো আর পানির খেলা

১২ বছরের বালক ইশরাক পবন
ও ১০ বছরের বালিকা রাইসা শারমিন পায়েল
টবের চারাগাছদের সিনথেটিক গড়ন বাড়ন এড়ায়ে
নিজেদের ছড়ায়ে দিতে চেয়েছিল দুনিয়াবি বিস্তির্ন   বাগানেঃ
কবরস্থানের বিশ্বায়ন ফেরে ভাইবোনেরাই কখনো বা লাল নিল বাগানবিলাস
কখনো বা ওপেন হার্ট সার্জারির পর ঢাকাই ক্লিনিকগুলার গোজামিল প্রেসক্রিপ্সান

গদ্যের নামতাখাতার গরমিলগুলো খুজতে খুজতে
পুরান কিছু স্ট্যাম্প
খুজে পাবার ঘটনার পাশাপাশি  কাশা জানালোঃ
আজকের পত্রিকাগুলো দেইখেন, স্ট্যাম্প বিষয়ক একটা খবর আছে

চারাপুত্র পবন ও  চারাপুত্রা পায়েলের মামা সাংবাদিকদের বলেনঃ
স্ট্যাম্পের বিষয়টি পবন ও পায়েল জানতে পারে গত ৬ মে।
ওই দিন শিশুদের বাবা পুলিশকে ব্যবহার করে চাপ দিয়ে
শিশুদের মায়ের কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন।

ওই দিন পুলিশের উপস্থিতিতেই
শিশুদের বাবা শিশুদের মাকে গ্রেপ্তার করা
ও মহিলা পুলিশ দিয়ে তাকে মারধর করার ভয় দেখিয়েছিলেন।
ওই সময় শিশুরা সেখানেই ছিল।
শিশুদের মামা জানান,
পরে পায়েল তার কাছে জানতে চায়, স্ট্যাম্পে লিখলে কি হয়?
তিনি তাকে বলেন,
স্ট্যাম্পের ওপরে কিছু লিখলে সেটা আর পাল্টানো যায় না।
এ থেকে সেচ্ছামৃত্যু পরোয়ানা
স্ট্যাম্পে লেখার বিষয়টি বাচ্চাদের মাথায় আসে বলে তার ধারনা।

দুই ভাইবোনের দুটি স্ট্যাম্পই ছিল পায়েলের স্কুলব্যাগের ভেতর
ওদের লাশ উদ্ধারের পর
বাড়িতে তল্লাশি করার সময় পুলিশ লেখা দুটি উদ্ধার করেঃ

স্ট্যাম্প ১ঃ

‘আমরা কি বাবার অবৈধ সন্তান?
আমার বাবা কেন বলল, আমাদের মতো সন্তানের দরকার নেই,
সেদিন সমাজের পাচজনের সামনে কেন আমাদের সন্তান হিসেবে অস্বীকার করল?
আপনারাই বলুন, আমার মা দোষী, না বাবা দোষী?’

খেয়াল করে দেখুন সুশিল সমাজের লোকজন
ভাইবোন দুজনেই লম্বা ঈকারের ব্যাপারেও বেশ সচেতন

স্ট্যাম্পে যে প্রশ্নবোধক ব্যবাহার করা যায় না
তাও হয়ত ভালই বুঝেছিল পবন ও পায়েল
এটা ওদের দুই ভাই বোনের একটা ভালরকম দুস্টামি
যাতে করে খেতে পারে রাস্ট্রের ছোট তরফ নামভেদে এন, জি, ও কর্মি

দ্বিতিয় স্ট্যাম্পে ওরা আর কোন দোলাচলের অবকাশ না দিয়েই
বিরামচিন্নের বিবর্তন ঘটায়েছিল মাগ্ধি প্রাকৃতের সিন্ধান্তসুচকতায়ঃ

‘আমি পায়েল, আমি এবং আমার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য আমরাই দায়ী।
আমার বাবা আমাদের সাথে যা করেছে, সেটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।
দাদা মায়ের কাছ থেকে জোর করে
স্ট্যাম্পে লিখে নিয়েছে যে ১ জুলাই বাসা ছাড়তে হবে।’

খাটিয়াতে ফুলস্টপ।দোলনা্তে ফুলস্টপ। তদন্ত কর্মকর্তা ফুলস্টপ।
বাড়িগুলা ফুলস্টপ।জুরাইনে ফুলস্টপ।কদমতলি থানা ফুলস্টপ।
ঢাকা শহর ফু্লস্টপ।বাংলাদেশ ফুলস্টপ।তারকাটার বেড়া ফুলস্টপ।
ফুলস্টপের স্ট্যাম্পে বিস্ময়বোধক ব্যবহার করা যায় না
অথচ পবন ও পায়েলের না ভাংগা ঘুমসহ
সিলগালাবিহিন স্ট্যাম্পটাই বেশ কয়েকটা বেধড়ক বিস্ময়বোধক চিন্নঃ

মঞ্চে দুলবার আগে মনসঞ্চয়ের সুত্রহারা একের পর এক বাংলাদেশের সন
সনপাপড়ি কিনতে দুই ভাইবোন দৌড়ে পেরিয়ে গেল
ভ্যানসাইকেলের ক্রিং ক্রিং ক্রিং রিক্সা বেলের ক্রিং ক্রিং ক্রিং
পাহাড় বিজয়ের ক্রিং ক্রিং ক্রিং বিশ্বকাপ ফুটবলের ক্রিং ক্রিং ক্রিং

ভোরের মোরগটাও রেওয়াজি কোক কোরক কো ঝুটি দুলায়ে দুলায়ে
হাফ প্যান্টের নিথরতায় ফুলতোলা ফ্রকের কুসুম কুসুম উমভাঙ্গা নিরবতায়

এক দেশে এক পবন ছিল এক দেশে এক পায়েল ছিল বলতে বলতে
অনেক দিনের চেনা শহরকে জাগালো অনেক দিনের অচেনা উপকথায়

কোক কোরক কোঃ
স্ট্যাম্পে লিখে ফেললে তা নাকি আর পালটানো যায় না
কোক কোরক কোঃ
স্ট্যাম্পে লিখে ফেললে তা নাকি আর পালটানো যায় না

কে বললো যায় না খুব যায়
জলছাপসহ স্ট্যাম্পটাকে জলে ছুড়ে দিলেই স্ট্যাম্পটার আর কোন মানেই দাড়ায় না

রাজাদের অভিধান বাচ্চাদের সবসময়ই ভুলটাই শেখায়


চয়ন খায়রুল হাবিব
১৪/০৬/২০১০
ব্রিটানি

হননের উপকথা ১ঃকবি যেভাবে বেচে থাকে, কবি যেভাবে মরে যায় তার সমাজকে চেনায়