Wednesday, 5 February 2020

ছায়াসিতাদের আত্মহত্যা ও রিতা দেওয়ান উপকথা।



‘অদ্ভুত রামায়ন’ কহে, 
সিতা নাকি রাবন ও মন্দদরির কন্যা। 
আবার জনান্তরে বলে 
রাবন তার ভাতিজা নল্কুবেরের স্ত্রি রম্ভাকে ধর্ষন করে।
 ধর্ষনের ফলে রাবন ঔরসে রম্ভার গর্ভে সিতার জন্ম হয়। 
সিতার জন্মের আগে গনকরা জানায়, 
তিনি রাবনের ধ্বংসের কারন হবেন। 
তাই রাবন তাকে পরিত্যাগ করেন।

‘আনন্দ রামায়ন’ কহে, 
রাজা পদ্মাক্ষের কন্যা পদ্মাই নাকি পরবর্তি জন্মের সিতা দেওয়ান
রাবন পদ্মার শ্লিলতাহানি করতে চাইলে তিনি আগুনে আত্মঘাতি হন। 
পরজন্মে তিনিই সিতা রুপে অবতির্না 
এবং রাবন ধ্বংসের কারন ও প্রবর্তনা। 

আরেকটি প্রচলিত ধারনা এই— 
সিতা আগের জন্মে ছিলেন বেদবতি নামে এক পুন্যবতি নারি।
রাবন তার  শ্লিলতাহানি করতে চাইলে 
তিনি রাবনকে অভিশাপ দেন, 
তিনি পরজন্মে রাবনকে হত্যা করবেন। 

‘রামায়ন’-এর অন্য লিখন জানায়, 
রাবন নাকি প্রকৃত সিতাকে হরন করে নাই। 
যাকে রাবন হরন করেছিলো, সে মায়াসিতা। 
দেবি পার্বতি আসল সিতাকে লুকিয়ে রেখেছিলেন 
এবং রাম-রাবনের যুদ্ধের পরে আসল সিতা প্রকট হন। 
মায়াসিতা নাকি পরে দ্রৌপদি হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন।

একের পর এক আত্মহত্যার নাম দেয়া হয় অগ্নিপরিক্ষা।
সিতা, মায়াসিতা, ছায়াসিতা, রিতা, মিতা, ববিতা, যাই হও
তোমার ফ্রিজ খুলে, 
সব বোতলের পানি ঢেলে দেখাতে হবে 
পানি না কি তিতাপানি না কি মিঠাপানি। 
ইনবাক্স খুলে তোমার  
এবং তোমার মেয়েদের পাসওয়ার্ড থানায় জমা দিতে হবে।
তারপর থানা পুলিশ মিডিয়া কর্মিরাসহ
ইনবাক্সের বায়োস্কোপে ঝাপায়ে পড়বে
মর্দ রামের পানিপড়াপ্রাপ্ত বানর ও ভাল্লুকেরা। 

শিবের ধনুক ভেঙ্গে সিতাকে জয় করেন রাম
সিতাকে বিয়ের পর, রাম ভাই লক্ষনসহ 
১৪ বছরের জন্য মালয়েশিয়াতে কাজ করতে যান।
কাগজপত্রের অসুবিধা হওয়ায় 
দুই ভাই জংগলে লুকায় থাকতেন।
সেখানে সোনার হরিনরুপি মানবাপাচারকারি  মারিচ  ছল করে 
রামলক্ষনকে নিয়ে যায় দুরে, 
আর রাবন সিতাকে তখন করে কিডনাপ।
রাম ও লক্ষনের ভোটারেরা মিছিলে বলে,
কেনো কিডনাপ হলে, এটাই তোমার পাপ।

রামলক্ষ্মন বানরসেনা ও ভালুকসেনার কোয়ালিশানে
রাবনবধ ও সিতা উদ্ধার করলেও, 
ভোটারদের প্রশ্ন নিরসনে  সিতাকে অগ্নিপরিক্ষা দিতে বলে।
যারা ভোট দেয় নাই, তারাও অগ্নিপরিক্ষার হুজুকে যোগ দেয়। 
অগ্নিপরিক্ষায় আগুনে পোড়া সিতা 
ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে গেলে,
ওখানকার দয়ালু ডাক্টাররা তার কস্মেটিক্স সার্জারি করে
আগের রুপ যৌবন ফিরায়ে দিলে
সিতাকে বিয়ে করে রাম ফেরে অযোধ্যায়।
সেখানে রাম হয় প্রধানমন্ত্রি, ভাই লক্ষন স্বরাস্ট্রমন্ত্রি। 

সিতা কোশলদেশের সম্রাজ্ঞি হন। 
রামের ঔরসে সিতার গর্ভসঞ্চার হয়। 
কিন্তু ভোটারদের ভেতর সিতাকে নিয়ে 
ব্যাকা কথা শুনে রাম তাকে ত্যাগ করেন। 
সন্তানসম্ভবা সিতা আশ্রয় নেন বাল্মিকি মুনির আশ্রমে। 
ওখানেই সিতা কুশ ও লব নামে দুই ছেলের জন্ম দেন। 

লব ও কুশ মায়ের অসম্মানে 
রামের কোরবানির ঘোড়া আটকে রাখে। 
রামের সাথে যুদ্ধ বাধে তাদের। 
রাম হেরে যায়। 
পরে বাল্মিকির সাহায্যে লব কুশ কোশল দেশে ফেরে মাকে নিয়ে। 
রাম আবার সিতাকে অগ্নিপরিক্ষা দিতে বলে
এবং তার রাজত্বের সব গুরুকুল আশ্রমকে পক্ষ্যে নিয়ে আসে। 
অভিমানি ও অপমানিতা সিতা, 'রামগিরির মা কা বাপ' বলে 
তার মা জগদ্ধাত্রি ধরিত্রিকে আবাহন করে অস্ফুটে বলে,
'ধরনি দ্বিধা হও'। 
দেবি জগদ্ধাত্রি সিংহাসনে উপস্থিত হন, 
এবং রিতা দেওয়ানের 
দুই নাবালিকা মেয়ের পাসওয়ার্ডসহ পাতালে প্রবেশ করেন।
দুই নাবালিকাকে জগদ্ধাত্রি 'নাম কি' সুধালে, তারা বলে, 
আমাদের নাম ছায়াসিতা, মায়াসিতা।

পৌরানিক কাহিনি অনুসারে 
জমি চাষ করার সময় লাঙলের আঘাতে 
মাটি  খুড়ে সিতার জন্ম হয়।
ছায়াসিতা, মায়াসিতা থেকে সিতার বিবর্তনে,
রাম ও লক্ষনের উত্তরাধিকার চাষাকুল ফর্মালো,
নাম নাও যত খুশি তত, 
কিন্তু কথা বলতে হবে আমাদের ইচ্ছামতো।
নাহলে ক্ষনার জিব্বার মতো ইউটিউবে কাটবো, 
তসলিমা নাসরিনের মতো দেশান্তরি বানাবো।

চিলমে টান মেরে তামুকের আবেশে
রাম ও লক্ষন ধরে জমিতে হাল,
নামের বিভ্রাটে তারা বেসামাল।
অহল্যা মানে
যেই জমি চাষযোগ্য নয় অর্থাৎ পাথরের  বধ্যভুমি।
ছায়াসিতা ও মায়াসিতার হারানো জন্মভুমি। 


চয়ন খায়রুল হাবিব
৬/০২/২০
ব্রিটানি, ফ্রান্স 



ছবি, সিতার অগ্নিপরিক্ষা, মুঘল চিত্রকলা, সপ্তদশ শতাব্দি।

সুত্র :  রামায়ন,  অদ্ভুত রামায়ন, আনন্দ রামায়ন, বংগ দর্শন,
পালাlগান গায়িকা রিতা দেওয়ানের গান নিয়ে  উদ্ভুত ধর্মিও বিতর্ক 
এবং  সে বিতর্কের রেশ ধরে মিডিয়াতে মেয়েদের নিয়ে তার ক্ষমা ভিক্ষা।