'ডৌলঃ জুলেখার জেরা পর্ব', ২০১৫ সংগ্রহে কবিতাটি গ্রন্থবদ্ধ। |
সুগন্ধে আমি নাচি
সুগন্ধে আমি বাচি
নাচিয়ের দেহ থেকে ওঠে ভাপ
আকাশনিল পরিতাপ গোত্তা খেয়ে নামে কোনিয়ার কমলায়
কমলার খোসা ছড়াতে ছড়াতে
আড় পেতে শুনি রুমি ও শামসের কথোপকথনঃ
রুমিঃ শামস আমি জানি, ওরা তোমাকে হত্যা করেছে
শামসঃ তুমিইত বলেছিলে আমাদের আত্মা কবিতায় বিলিন, আমাদের বিনাশ নাই
রুমিঃ কিন্তু পরমতমো কবিতায়ও মেলেনা
তোমার সঙ্গের উত্তেজনা
এসো তাহলে কোনিয়ার কিনারে পাহাড়ি খাজের ধারে
প্রত্যেক টুকরো ভাঙ্গা নুড়ি পাথরে
আমার শুকনা রক্তের ছাপ ধরে
শোনো পোকা মাকড় পিপড়াদের মাতম
রুমিঃ কি পয়মন্তর এই পোকাগুলা
আশপাশের পিপড়াগুলাও নাদুশনুদুশ
শামশঃ তুমি শোকে মাতাল
অথচ সংগলিপ্সার আড়ালে খুজছ বিভতসরস
এখানেই শিল্পের গোলমাল
আমার নিখোজ সংবাদ অজুহাত মাত্র
রুমিঃ হোক অজুহাত, হোক বিভতসরস
তবু আমি ঐ পোকাদের কাছে যাব
পোকামাকড়, পিপড়াদের সাথে নেচে নেচে
শুন্যতাকে ঘোচাব মহাপ্রানের মত্ততায়
ও শামস ও শামস মানে ও সুরুজ ও গরম সুরুজ
গলা ফাটিয়ে চেচাতে চেচাতে আমি তৃশ্নায় পেরেশান
পাহাড় চিপে বের করি তালগাছের রস
গলা বেয়ে পাকস্থলিতে আনন্দের বিষাক্ত কশ
হাত পা মাথা অবসাদে ঝিম ঝিম
অন্ধ মুরিদের কাছে আধারের ফারাক কৃত্রিম
আলো ঝিকিরের প্রস্তুতিঃ
১২ই ডিসেম্বার চাদপাগল চাদপাগলিদের শপথ নেবার দিন
শপথ মানে সংগমঃ আর বছর বুধবারে জন্ম নেবে চাদশিশু শামস ওরফে শাক্যমুনি
ঐ দিন বিচার দিবসঃ ঐ দিন শুধু খাওয়া চলবে
যা কিছু লাল ও গোলাপি মসুরির ডাল, টমাটোর খাট্টা,
লাল শাক, লাল মারিচ, লাল জবা, গাজর,
আর যা যা ঐ সব রঙের আনাজ়।নিল, সবুজ, সাদা , কাল, মাছ, মাংষ চলবেনা।রংধনু বন্ধ।
রক্তপাতও বন্ধ।
আলাপ চলবেনা। বিলাপ চলবেনা।
খালি হাশফাশ।হাড্ডি খাবে চামড়া।কুত্তা চায় রাতিবঃ
জিহবা ঝুলে পড়লো ভাদ্র মাস এলো গেলো
যোগ ও জ্যামিতি বিষয়ক সংলাপঃ
রুমিঃ জ়্যামিতি বুঝলাম , যোগটা কি?
শামসঃ শ্বাশ-প্রস্বাস নিয়ন্ত্রনের কৌশল।
ভারতিয় রিশিদের আবিস্কার।
রুঃ আমাদের নাচ, গান, ঝিকির, আশকার এগুলোওত
কৌশল।কিন্ত আমাদের লখ্য আধ্যত্যের কেন্দ্রে পৌছোনো।ওদের লখ্যটা কি?
শাঃ ওদের বর্নাশ্রম প্রথাটা বরং বোঝা সহজ।ওটা শাষন কৌশল।লখ্য হছ্যে বংশ পরম্পরায় শাষনের লাগাম একটা শ্রেনির হাতে রাখা।কিন্তু যোগ ব্যপারটা একদিকে সহজ আবার বেশ জটিল।এর সাথে ব্যয়াম শব্দটা যোগ
করে ওরা এতে শারিরিক শৃঙ্খলা আরোপ করেছে।
তোমার চর্চায় তুমি কেন্দ্রে গিয়ে কেন্দ্রাতিত।ওরা মৃত্যুকে কেন্দ্র ধরে নিয়ে মৃত্যুঞ্জয়ি হবার চেষ্টা করছে।
রুঃ চেষ্টা একটা বটে।এ-চেষ্টার সত্য প্রমান কঠিন।
মৃত ল্যজারাসকে যিশুর প্রান ফিরিয়ে দেবার মত।
শাঃ ভাল তুলনা।যিশুর ব্যপারগুলো কিন্তু সত্যমিথ্যা নিরিখের বাইরে,
ওগুলো শ্বাস্যত প্রতিকি অর্থে সত্য।
আর ভারতের যোগ চর্চাকারিদের সাথে যিশুর অবস্থানের মৌলিক পার্থক্য হছ্যেঃ
যিশু একই সাথে শাষক রোমানদের আর নিজ ধর্মের পুরোহিতদের বিরোধিতা করেছিল।
আর যোগ ব্যায়ামকারিরা কখনোই প্রথার বি্রোধি নয়।এখানেই জ়্যমিতির প্রসংগ আসছে।
রুঃ কিভাবে?
শাঃ প্রথমে বলি আমাদের খাদ্যাভাস নিয়ে।
যখন আমরা দুধ খাই তখন সে-দুধ কেবলই প্রাকৃতিক।কিন্তু দুধ, খিরের ময়ানে,
আটা, ময়দার ভিয়ানে যখন তা হয়ে ওঠে মিঠাই তখন তা শিল্প।
বাজারে ঘুরতে ঘুরতে মিঠাইগুলোর দিকে তাকিয়ে আমার জ্যমিতির কথা মনে হল
শৈষবে ফিরে গেলাম
তাব্রিজের শন-পাপড়ির স্বাদ মনে পড়ল
আধ্যাত্ম যখন চাইছে বিমুর্তে মুক্তি।
জ়্যমিতি তখন সবকিছুকে বাধছে সুনির্দিস্টতায়।
কিন্তু এ বাধন তোমাকে নিয়ে যেতে পারে অসিমেও।যে তারাদের আলো এখনো পৃথিবিতে
পৌছেনি তাদের দুরত্বও আমরা মাপতে পারব জ়্যমিতি দিয়ে।
পরমে পৌছুতে আধাত্ম যখন সম্পর্ক বিজুক্তির
কথা বলছে, য্যমিতি তখন জুড়ে দিছ্যে সাম্যের সাথে বৈশম্য
রুঃ মানে বলতে চাইছ,
তোমার জ্যামিতিক মিঠাই-তত্বের নিক্তিতে
শুধু স্বাদ নয়, বিস্বাদকেও মাপা যাবে
আর মাপা গেলে রোখার ঝিকিরও হবে লাগসই
তাই সই।নারি, প্রেম, শিশু, গৃহ, যত্নবোধ ও জ্যামিতি
জ্যামিতিতে মুক্তি।
চয়ন পাগলে ভনে শামস-এ-তাব্রিজির
সংখেপিত শন-পাপড়ি তত্ত্বঃ
শামস হল সুরুজ
উদিত হন তাব্রিজে
দিবসের মাঝ প্রহর কোনিয়ায়
অস্ত যান খোই শহরে
খোই শব্দের অর্থ নুন
চয়ন খায়রুল হাবিব
লন্ডন
ডিসেম্বার ২০০৭